নগরীর পাঁচলাইশ, চান্দগাঁও ও রাউজান থানার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংঘর্ষে নিহতের মামলাসহ পৃথক তিন মামলায় চট্টগ্রাম–৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ফজলে করিমকে আরও ৫ মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট (গ্রেপ্তার) দেখান আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারদিন মুস্তাকিম তাসিম ও অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার ভার্চুয়ালি শুনানি শেষে এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ–কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দীন। এসময় আদালতে শুনানিকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়। নিরাপত্তাজনিত ও অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ফজলে করিমকে সশরীরে আদালতে হাজির করা হয়নি। ফজলে করিমের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, সংঘর্ষসহ বিভিন্ন অভিযোগে চট্টগ্রামের রাউজান, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, কোতোয়ালী থানাসহ আদালতে কমপক্ষে ১০টি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আদালত সূত্র জানায়, ফজলে করিমকে রাউজান থানার মামলায় চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারদিন মুস্তাকিম তাসিম ৩ দিনের রিমান্ড এবং অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার আদালত নগরের চান্দগাঁও থানায় ৩ দিন এবং পাঁচলাইশ থানার মামলায় ২ দিন করে মোট ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ফজলে করিমের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন জানান, ফজলে করিমকে অসুস্থতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালতে হাজির না করে ভার্চুয়ালি শুনানি করার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়।
জানা যায, গত ২৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হারুন আদালত ২ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। রাউজানে মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটির ইবাদতখানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের দুই মামলা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের ঘটনায় পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও থানার দুই মামলা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসম্পাদক নুরুল আলম হত্যার ঘটনায় চকবাজার থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। এরপর গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে একটি হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।