যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ে খুশি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা চাচাকে অপহরণ করে ভাতিজারাই খুন করেন। ২০১৬ সালে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় আপন চাচাকে অপহরণের পর নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় তিন ভাইকে ফাঁসি ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড ও একজনকে খালাসের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল রোববার (৬ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক, তার ভাই ইউনুস হোসাইন মানিক ও ইব্রাহিম মোস্তফা আবু কাইয়ুম। মামলায় একই এলাকার নুরুল আজিজের ছেলে সোহায়েতকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। শেফায়েত নামে মামলার আরেক আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবু বক্কর সিদ্দিক আদালতে উপস্থিতি থাকলেও অন্যরা পলাতক ছিলেন। খবর বাসসের।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট আইয়ুব খাঁন বলেন, রায়ে তিনজনের ফাঁসি, তিনজনের যাবজ্জীবন ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায়ে উভয়কে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে সহযোগিতাকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরী মীর্জা বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। যদিও আসামি পক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দীন এই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে আপিলের কথা জানান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩০ জুন কঙবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকায় জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার রায়ের দিন চা দোকানে টিভিতে ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর প্রচার হচ্ছিল। তা দেখে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা বলতে থাকেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর একে একে সব রাজাকারের ফাঁসি দিচ্ছে।’
এ সময় চা দোকানে থাকা জামায়াত সমর্থক আসামিরা নুরুল হুদার কথায় ক্ষিপ্ত হন। পরে চা দোকান থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছেলে শাহজাহান বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ৩ জুলাই চকরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় পাঁচ জনকে আসামি করা হয়। চকরিয়া থানার এসআই মো. আলমগীর ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর তদন্ত শেষে পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার আদালত এ রায় দেন।