তিন বছর পর এবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

পরিদর্শন শেষে ঘোষণা মেয়রের

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

তিন বছর পর আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের নাগরিকরা শ্রদ্ধা জানাবেন। নগরের কে সি দে রোডে নির্মিত শহীদ মিনারে এ শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। গতকাল দুপুরে শহীদ মিনার পরিদর্শনে গিয়ে এ ঘোষণা দেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। জানা গেছে, জাতীয় কর্মসূচিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পালন করা হয় বিজয় দিবসের কর্মসূচি। এরপর একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর পুরনো কাঠামোটা ভাঙার কাজ শুরু হয়। একইসঙ্গে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুল প্রাঙ্গণে অস্থায়ী শহীদ মিনার করে চসিক; যেখানে ২১ ফেব্রুয়ারিসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শ্রদ্ধা জানান সাধারণ মানুষ।

এদিকে গতকাল পরিদর্শনে গিয়ে ডা. শাহাদাত হোসেন একুশে ফেব্রুয়ারির আগেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ পরিচ্ছন্ন ও রঙের কাজ শেষ করে প্রস্তুতি সম্পন্নের ঘোষণা দেন। এসময় মেয়র বলেন, নবনির্মিত চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ ছিল এবং এতদিন অস্থায়ী শহীদ মিনার হিসেবে মিউনিসিপ্যাল মডেল হাইস্কুলে শহীদ মিনারকে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাও সিটি কর্পোরেশনের একটা স্কুল। আশা করছি, চট্টগ্রামের মানুষ ২০২৫ সালে এসে ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন যে স্থাপনা, আগের যে জায়গা সেই ঐতিহ্যবাহী জায়গায় তারা ফুল দেবে এবং এটা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

মেয়র বলেন, সার্বিকভাবে সিটি কর্পোরেশন যেহেতু আগে থেকেই এটার ব্যবস্থাপনায় ছিল এবারও আমরা করব, আর নিরাপত্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পুলিশ আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করবেন। আশা করছি, এবার আলাদা একটা আমেজে হবে। কারণ অতি আগ্রহ নিয়ে চট্টগ্রামের মানুষ অপেক্ষায় আছে, শহীদ মিনারটি কীরকম হয়েছে। প্রথমবার তারা এখানে আসবে। এটার প্রতি নগরবাসীর আলাদা একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

মেয়র বলেন, মানুষ তো চায় এখানে আসতে। তাদের যে আগ্রহ আছে সেটাকে আমরা বন্ধ করে রাখব কেন। এটা আমাদের একটা ঐতিহ্য। এই জায়গাতেই সবাই আসতে চায়। আশা করছি এবার তাদের আশা পূর্ণ হবে। আপাততত আমরা এ বছর এখানে শ্রদ্ধা জানাই। এটার যিনি ডিজাইন করেছেন, আর্কিটেক্ট উনি এখন আমেরিকাতে আছেন। এখানে মিনারটা আরো বাড়িয়ে দেওয়ার (উচ্চতা) একটা প্ল্যান আছে। কিন্তু আমরা কাজ শুরু করিনি। উনি যদি আসেন বাড়ানোর কাজে বেশি সময় লাগবে না। সেটার জন্য ডিও লেটার দিয়েছি। আল্টিমেটলি সেটার কাজও হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম খান।

জানা গেছে, ২৮১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লেঙ প্রকল্পের আওতায় পুরনো শহীদ মিনারের আদল ঠিক রেখে নির্মাণ করা হয়েছে নতুন শহীদ মিনার ও উন্মুক্ত গ্যালারি। ২০২৩ সালে শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু নির্মিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দৃশ্যমান নয় দাবি করে বিভিন্ন সময়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকর্মীরা। তারা প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ছাড়া এ শহীদ মিনারে ফুল দিতে আপত্তি জানান। তাই ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২০২৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেননি তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২ আসামি গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধনতুন তিন কমিটি বাতিল দাবি একাংশের, সড়ক অবরোধ