তিন বছরেও শেষ হয়নি উন্নয়ন কাজ, জনদুর্ভোগ চরমে

গহিরা-ফটিকছড়ি সড়ক

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | বুধবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

উত্তর চট্টগ্রামের গহিরা-ফটিকছড়ি সড়কের উন্নয়ন কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। ধুলা-বালি, লক্কর ঝক্কর, ভাঙা সড়কে চরম জনদুর্ভোগ সৃষ্টি আর অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের শেষ নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এই অবস্থার দ্রুত উত্তরণ চান ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উত্তর চট্টগ্রামের রাউজানের গহিরা থেকে ফটিকছড়ি সদর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কটি পার্বত্য রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি-ঢাকা সড়ক এবং মাইজভাণ্ডার দরবারে যাতায়তের বিকল্প সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে দীর্ঘ দিন। ২০১৯ সালে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়কটিতে ৩৮টি বড় ব্রিজ, কালভার্ট, ইউ ড্রেন, গাইড ওয়াল, হাট-বাজার এলাকায় সিসি ঢালাইসহ ১২ ফুট থেকে ১৮ ফুটে উন্নীত করণের জন্য ১০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। সড়কটি বাস্তবায়নে মেসার্স আল আমিন অ্যান্ড এম এইচ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয়া হয়। দীর্ঘ তিন বছর অতিক্রান্ত হলেও সড়কটির সিংহ ভাগ কাজ এখনো শেষ হয়নি। অন্তত ১৫টি কালভার্টের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ৬ ফুট সড়ক প্রশস্তকরণের জন্য অনেক স্থানে মেকাডম হয়নি। পূর্বের কার্পেটিং নষ্ট হয়ে সড়কটি চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ব্রিজ-কালভার্টের লোহা পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে। ব্রিজের সিসি ঢালাইতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করতেও দেখা গেছে। প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুই উপজেলার অন্তত ৫ লাখ মানুষ।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম দুর্নীতি ও অবহেলার জন্য ক্ষোভ জানান বখতপুর এলাকার বাসিন্দা হোসেন, জালাল, আনিস মাহমুদ। তারা জানান, ছারা বটতলের পশ্চিম পাশে কালভার্ট তৈরির জন্য নিম্নমানের তিন নম্বর ওরভাঙা ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সওজের নিরবতায় ঠিকাদার এমন অনিয়ম করছে। লেলাং এলাকার বাসিন্দা কামরুল, হোসাইন, বিপ্লব জানান, সড়ক তো নয়, যেন ধূলাবালির রাজধানী। গর্ভবতী মহিলা নিয়ে কেউ এখন এই সড়কে চলাচল করে না। তিন বছরেও ব্রিজ, কালভার্টগুলো তৈরি করতে পারেনি। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খুবই নিম্ন।
ফটিকছড়ি পৌরসভার মেয়র মো. ইছমাইল হোসেন বলেন, আমার পৌরসভা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অংশ এই সড়কে। তারা বিগত তিন বছরেও পৌর এলাকার ব্রিজ, কালভার্ট ও সড়ক উন্নয়ন শেষ করতে পারেনি। বৃষ্টিতে ভিজে, পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে লোহা। এই লোহায় তৈরি ব্রিজ-কালভার্ট কতটুকু টেকসই হবে প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়।
ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিবুল হাসান বলেন, ফটিকছড়ির অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সওজকে সড়কের কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগাদা দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সওজ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, গহিরা-ফটিকছড়ি সড়কের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনেক অনিয়মের খবর পেয়েছি। তাদের দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বারবার তাগাদা দেয়া হয়েছে। বর্ধিত সময়ে কাজ শেষ না করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিকআপের সঙ্গে সংঘর্ষে নছিমন চালক নিহত
পরবর্তী নিবন্ধ১০ বছর পর জুঁইদন্ডী ইউনিয়নে নির্বাচন ইভিএমে ভোট