তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ১ এপ্রিল, ২০২১ at ৪:২৮ পূর্বাহ্ণ

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির সব বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নগরীর চিড়িয়াখানাও বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গতকাল পৃথক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পাশাপাশি গণপরিবহনে ৫০ ভাগ যাত্রী পরিবহন, প্রত্যেক যাত্রীকে মাস্ক পরিধান এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসাথে তিন পার্বত্য জেলায় প্রতিদিন রাত আটটায় সকল দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মার্কেট বন্ধ এবং হোটেল রেস্টুরেন্টের চেয়ার টেবিল তুলে রেখে সেবা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফে। এদিকে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটন জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হলেও কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধের বিষয়ে এখনো কোনো ঘোষণা আসেনি। তবে শীঘ্রই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব ও হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন জানান, সার্বিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় ১ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। আমাদের রাঙামাটি প্রতিনিধি জানান, গতকাল বুধবার বিকালে জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, জেলার সকল পর্যটন কেন্দ্র দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। এর পাশাপাশি সকল গণপরিবহন ৫০ ভাগ যাত্রী পরিবহন করবে। যাত্রীরা মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতায়াত করবেন। এছাড়া প্রতিদিন রাত আটটায় দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো অর্ধেক চেয়ার টেবিল তুলে রেখে সেবা প্রদান করবে। এছাড়া আবাসিক হোটেলগুলো বন্ধ থাকবে। সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, রাঙামাটিতে সকল ধরনের সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে মোবাইল কোর্ট মাঠে থাকবে। জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মামুন মিয়া, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য বাদল দে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, এএসপি মো. মারুফ আহম্মেদ, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুজ্জামান মহসিন রোমান প্রমুখ।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরিজির সভাপতিত্বে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বাস্থ্য বিভাগ, আইনশৃক্সখলা বাহিনী, আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি ও সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক বলেন, আগামী ২ সপ্তাহের জন্য বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো বন্ধ থাকবে। আবাসিক হোটেলগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দুসপ্তাহ পর পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া হবে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে দুজনের কক্ষে একজন করে ভাড়া দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে আবাসিক হোটেল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলো ১৪ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। গতকাল জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) থেকে খাগড়াছড়ির আলুটিলা, রিছাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্কসহ সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। একই সাথে সকল ধরনের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান এবং এই উপলক্ষে জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি পালনে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
টেকনাফ প্রতিনিধি জানান, সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত দেশ-বিদেশের কোনো পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করতে পারবেন না। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে। গতকাল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজ চৌধুরী বলেন, জাহাজ চলাচল বন্ধের নির্দেশ কেউ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সরকারের ১৮ নির্দেশনা পালনে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আপাতত সৈকতে পর্যটক সমাগম সীমিত করা হচ্ছে। প্রতিদিন সৈকতে একাধিক মোবাইল টিম কাজ করছে। তবে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে খুব শীঘ্রই পর্যটন কেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা আসবে। জেলা প্রশাসক বলেন, হুট করে কোনো সিদ্বান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। আমরা কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্ন ঘটতে পারে ১ ও ৭ এপ্রিল
পরবর্তী নিবন্ধঈদে এক কোটি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার