পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একজনকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দফায় দফায় সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাতে আবারো সংঘর্ষে জড়ায় আরেক পক্ষের সঙ্গে। তিন পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও বিজয়ের একাংশ প্রথমে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে আহত হয় অন্তত ১০ জন। এরপর রাত ৮টায় আবার সংঘর্ষে জড়ায় উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও সিএফসির একাংশ।
জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি জীববিজ্ঞান অনুষদের সামনে বিজয় গ্রুপের একজনকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কিছু কর্মী মারধর করে। পূর্ব ঘটনার জের ধরেই বুধবার রাতে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। রাতের ঘটনার পর দুপুরে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
এসময় ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী মোড়ে এবং সিঙটি নাইন গ্রুপের নেতাকর্মীরা শাহজালাল হলের সামনে অবস্থান নেয়। পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট–পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের দেশীয় অস্ত্রের মহড়া দিতে দেখা যায়।
শাখা ছাত্রলীগের উপ গ্রুপ বিজয়ের একাংশের নেতা সাখাওয়াত হোসাইন বলেন, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের ২০১৭–১৮ সেশনের শিক্ষার্থী রাশেদকে পূর্ব ঘটনার জের ধরে আজকে পিঠা উৎসবে ধরে মারধর করে। সেই মারধর পরে রূপ নেয় সংঘর্ষে। এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতের সংঘর্ষে সিঙটি নাইন শাহজালাল হলের সামনে ও সিএফসি আমানত হলের সামনে অবস্থান নিয়ে ইট–পাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। জানা যায়, সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করে সিঙটি নাইনের কর্মীরা। এর জের ধরে শুরু হয় সংঘর্ষ। গতকাল রাত ১১টায় প্রতিবেদন লেখা অবধি সংঘর্ষ চলমান আছে।
সিঙটি নাইনের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ প্রতীম বড়ুয়া আজাদীকে বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলে আমাদের একটা বিজয়ের ছেলেরা অকারণে মারধর করেছে। সেই থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। পরে প্রশাসন এটার সমাধান করবে বললেও করেনি। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে আবার আমানত হলের কয়েকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
সিএফসির একাংশের নেতা ও সাবেক সহসভাপতি খবির সাদাফ আজাদীকে বলেন, সিঙটি নাইনের ওরা বুঝেছে চবি ছাত্রলীগের কমিটি দিবে। তারা কমিটি পাবে না দেখে ঝমেলা করছে। আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ প্রতিবেদন লেখার সময় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় ক্যাম্পাসের থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. নুরুল আজিম সিকদার বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় বলেন, দুই গ্রুপের মাঝে তুচ্ছ বিষয়ে সংঘর্ষ ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন প্রক্টরিয়াল বডি। পরে পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছি।