ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজের উইকেটে চলছিল বোলারদের রাজত্ব। আর সে রাজত্বে প্রথম ইনিংসে পিছিওে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করল তারা। তিনদিনেই স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে প্রথম টেস্ট জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। বারবাডোজ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৫৯ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের প্রথম দুই দিনে দুই দলই ছিল প্রায় সমানে সমান। তৃতীয় দিনে ব্যাটে–বলে দাপটে প্যাট কামিন্সের দল জিতে গেল বড় ব্যবধানে। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের টানা দুই আসরের ফাইনালিস্টরা নতুন আসরের যাত্রা শুরু করল জয় দিয়ে। ট্রাভিস হেড, বাউ ওয়েবস্টার ও অ্যালেক্স কেয়ারির ফিফটি দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৩১০ রান। প্রথম ইনিংসে ১০ রানে এগিয়ে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩০১।
কিন্তু ক্যারিবিয়ানরা গুটিয়ে যায় ১৪১ রানেই। টেস্ট ক্রিকেটে ত্রয়োদশবার ৫ উইকেটের স্বাদ পান জশ হেইজেলউড। ৪ উইকেটে ৯২ রান নিয়ে শুক্রবার দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেড ও বাউ ওয়েবস্টার দলকে এগিয়ে নেন আরও অনেকটা দূর। পঞ্চম উইকেটে ১০২ রান যোগ করেন দুজন। দুই দল মিলিয়ে গোটা ম্যাচের একমাত্র শতরানের জুটি এটি। দুই ব্যাটসম্যানকেই বিদায় করেন শামার জোসেফ। নিজের মতো ব্যাট করেই ৯৫ বলে ৬১ করেন হেড। ১২০ বলে ৬৩ রানে ফেরেন ওয়েবস্টার। পঞ্চম টেস্টে তার তৃতীয় ফিফটি এটি। এরপর অস্ট্রেলিয়ার রান তিনশ ছাড়াতে পারে মূলত অ্যালেক্স কেয়ারির দারুণ ব্যাটিংয়ে। বোলিং সহায়ক উইকেটে পাল্টা আক্রমণে ফিফটি করেন তিনি ৪০ বলে। এই কিপার–ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে আসে ৬৫ রান। লেজের তিন ব্যাটসম্যান অবদান রাখেন একটু করে। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট শিকার করা শামার জোসেফ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন পাঁচ উইকেট। ৯ টেস্ট এই স্বাদ পেলেন তিনি চারবার। এর তিনটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচ জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩০১ রানের। এই উইকেটে ৩০১ রানের লক্ষ্য ভঙ্গুর ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং লাইন আপের জন্য ছিল ভীষণ কঠিন। দারুণ কিছু করতেও পারেনি তারা। প্রথম ওভারেই অভিজ্ঞ ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে ফেরান মিচেল স্টার্ক। এরপর জন ক্যাম্পবেল ও কেসি কার্টি চেষ্টা করেন পাল্টা আক্রমণে ঘুরে দাঁড়াতে। কিন্তু উল্টো ঘুরে দাঁড়ান জশ হেইজেলউড। প্রথম স্পেলে তিন ওভারে ১৮ রান দেওয়া পেসার পরের স্পেলে তিন ওভারেই উইকেট আদায় করেন চারটি। ১০ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ১ উইকেটে ৪৭। সেখান থেকে ৩৯ রানের মধ্যে হারায় তারা ৭ উইকেট। একশর নিচের গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় তখন তারা। বোলিংয়ের নায়ক শামার জোসেফ ব্যাট হাতেও কিছু বিনোদন জোগান দর্শকদের। তাকে সঙ্গ দেন জাস্টিন গ্রেভস। দুজনে গড়েন ইনিংসের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি। এতেই মনে হচ্ছিল ম্যাচ গড়াবে নতুন দিনে। কিন্তু শেষ বিকেলে টানা দুই বলে দুই উইকেটের পতনে শেষ হয়ে যায় খেলা।