স্ত্রী রীতা রানী দাশ, দুই মেয়ে শ্রাবন্তী দাশ ও বর্ষা দাশ এবং যমজ দুই ছেলে দ্বীপ দাশ ও দিগন্ত দাশকে নিয়ে সাজানো–গোছানো সংসার ছিল প্রবাসী নারায়ণ দাশের। কিন্তু একটি সড়ক দুর্ঘটনা তছনছ করে দিল তার সাজানো সংসারটি। ঘাতক বাস মুহূর্তেই কেড়ে নিল তার স্ত্রী ও চার ছেলেমেয়ের তরতাজা প্রাণ। এখন তার পরিবারে আর কেউ রইল না। গতকাল হাটহাজারীতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৭ জনের মধ্যে প্রবাসী নারায়ণ এখন একেবারে একা, নিঃস্ব। চন্দনাইশের মানুষ এ রকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সাক্ষী হবেন তা কল্পনাও করেননি। গতকাল সকালেও নারায়ণের স্ত্রী–সন্তানরা ছিলেন হাসি–খুশি। সবাই মিলে যাচ্ছিলেন ফটিকছড়িতে আত্মীয় বাড়িতে। কিন্তু দুপুর হতে হতে সব শেষ হয়ে গেল।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় নারায়ণে বড় ভাই পঙ্গু শম্ভু দাশের সংসারও। তার স্ত্রী, তিন ছেলের মধ্যে একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিল বিপ্লব দাশ (৩২)। বিপ্লব ঘটনাস্থলে নিহত হওয়ায় তাদের সংসারের আয়–রোজগারের পথও বন্ধ হয়ে গেল। কাঞ্চন বালা দাশ (৪৫) ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। ঘরের দাওয়ায় বসে আর্তনাদ করছিলেন তিনি। কখনো নির্বাক, কখনো চিৎকার করে কাঁদছেন। এ অবস্থায় সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাটুকুও কারো নেই। ঘটনার পর থেকে শোকে স্তব্ধ ধোপাপাড়া এলাকা। জোয়ারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন আহমেদ চৌধুরী রোকন বলেন, একই পরিবারের নিহত ৭ জনের মধ্যে নারায়ণ দাশের স্ত্রী, ফুটফুটে দুই কন্যা ও যমজ দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। সবচেয়ে খারাপ লাগছে তার জন্য। সে কীভাবে এমন ঘটনা সহ্য করবে জানি না। সৃষ্টিকর্তা তাকে ধৈর্য ধারণ করার ক্ষমতা দিক। তিনি জানান, নারায়ণ বাতামতল এলাকায় লন্ড্রির দোকান করতেন। ওমান গিয়েছিলেন দেড় বছর আগে। দুর্ঘটনায় জড়িত ওই চালককে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এছাড়া যাতে আইনের ফাঁকে পার পেয়ে না যায় সেই ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান প্রশাসনের কাছে।