‘চট্টগ্রাম কবিতার শহর’ শিরোনামে আট বছরের ধারাবাহিকতায় বাচিক শিল্প চর্চা কেন্দ্র তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের আয়োজনে নবমবারের মতো বর্ণিল অনুষ্ঠানমালায় অনুষ্ঠিত হয়েছে কবিতা উৎসব। গতকাল শুক্রবার সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী এ উৎসব উদ্বোধন করেন কবি মোহন রায়হান ও আয়োজনের প্রধান অতিথি সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর উদ্বোধনী বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করেন তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের শিল্পীরা। এরপর ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় প্রয়াত কবি হেলাল হাফিজের প্রতিকৃতিতে। এ উৎসব তাঁর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে।
তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের সভাপতি কবি ভাগ্যধন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের পরিচালক নাট্যজন অভীক ওসমান, সংস্কৃতিজন ডা. এস এম সারওয়ার আলম, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আ.ফ.ম মোদাচ্ছের আলী।
অনুষ্ঠানের প্রভাতী আয়োজনে ছড়াপাঠ করেন এমরান চৌধুরী, অমিত বড়ুয়া, আখতারুল ইসলাম, অরুণ শীল, আবু তালেব বেলাল, সনজীব বড়ুয়া, বিপুল বড়ুয়া, আবুল কালাম বেলাল, জসিম মেহবুব, কেশব জিপসী, রুনা তাসনীম, আলেক্স আলীম, লিটন কুমার চৌধুরী ও কাশেম আলী রানা। আবৃত্তি করেন ফারুক তাহের, অনন্যা চৌধুরী, হামিদ উদ্দীন, ইলিয়াস হোসাইন, স্নিগ্ধা বড়ুয়া, জলি চৌধুরী, জাভেদ হোসেন, উম্মে সালমা নিঝুম, অনন্যা দাশ, মাহফুজা হক স্নিগ্ধা ও অথৈ রহমান। সকালের আয়োজনে শিশুদের অংশগ্রহণে ছিল ‘শিশু প্রহর’। এ পর্বে অর্ধশত শিশুশিল্পী একক ও বৃন্দ আবৃত্তি পরিবেশন করে।
বিকাল ৩টায় বৈকালিক আয়োজন শুরু হয় তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের বড়দের বিভাগের সদস্যদের একক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। মঞ্চে কবিতার গান পরিবেশন করে শিল্পী আল তুষি। এরপর অনুষ্ঠিত হয় গোলাম মুস্তাফা স্মৃতি সম্মাননা প্রদান। এবার সম্মাননা পেয়েছেন নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী। এ পর্বে অতিথি ছিলেন শিশুসাহিত্যিক রাশেদ রউফ, আবৃত্তিকার অঞ্চল চৌধুরী ও সংগঠক সজল চৌধুরী। আবৃত্তিশিল্পী শ্রাবণী দাশগুপ্তার সঞ্চালনায় জীবনী পাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী সেঁজুতি দে। অতিথিরা প্রদীপ দেওয়ানজীর হাতে উত্তরীয়, ক্রেস্ট, বই, ১০ হাজার টাকার চেক ও স্মারক তুলে দেন।
বৈকালিক আয়োজনে আবৃত্তি করেন আবৃত্তিশিল্পী মিলি চৌধুরী, আয়েশা হক শিমু, রেখা নাজনীন, প্রণব চৌধুরী, মছরুর হোসেন, বনকুসুম বড়ুয়া, শুভাশীষ শুভ, ইকবাল হোসেন জুয়েল, শামীমা ইয়াসমিন, ঐশী পাল, মোহাম্মদ সেলিম ভূইয়া, সুপ্রিয়া চৌধুরী, জেবুন নাহার শারমিন, বর্ষা চৌধুরী, অনির্বান চৌধুরী, তাসলিম হাসান ও আবদুল্লাহ ফারুক রবি।
সন্ধ্যায় কবিতাপাঠ পর্বে কবি মনিরুল মনিরের সঞ্চালনায় কবিতাপাঠ করেন কবি সাথী দাশ, অভীক ওসমান, আশীষ সেন, ইউসুফ মুহাম্মদ, ওমর কায়সার, শুক্লা ইফতেখার, রিজোয়ান মাহমুদ, বিজন মজুমদার, জিন্নাহ চৌধুরী, কামরুল হাসান বাদল, হাফিজ রশিদ খান, শ ম বখতিয়ার, দিলীপ কিত্তুর্নিয়া, শামীম হাসান, খালেদ হামিদী, মুনির আহমদ, মুহাম্মাদ আমানুল্লাহ, আখতারী ইসলাম, নাজিমুদ্দীন শ্যামল, ভাগ্যধন বড়ুয়া, পুলক পাল, মোজাম্মেল মাহমুদ, অনুপমা অপরাজিতা, নিশাত হাসিনা শিরিন, তাপস চক্রবর্তী, আলী প্রয়াস, শেখর দেব, আজিজ কাজল, সারাফ নাওয়ার ও রিমঝিম আহমেদ।
উৎসব ঘোষণায় আয়োজকরা বলেন, ‘মানব সভ্যতার রূপায়ণে কবি ও কবিতা অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিপ্লবীর রক্তে রঞ্জিত এই চট্টগ্রামে লিখিত হয়েছে শোষণ ও বৈষম্য মুক্তির মহাকাব্য। এখানেই রচিত হয়েছে একুশের প্রথম কবিতা। তারই ধারাবাহিকতায় বন্দর নগরীর বাঁকে বাঁকে জমা আছে কবিতার প্রবহমানতা। কবিতাকে ঘিরে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের এ আয়োজন সেই প্রবহমানতারই ধারাবাহিকতা।’












