অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক, তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের বিরুদ্ধে আলাদা চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়–১–এ এসব মামলা দায়ের করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মামলা দায়েরের এ তথ্য দিয়েছেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। খবর বিডিনিউজের। তারিক সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ২৮ কোটি ৫৯ লাখ ৬৩ হাজার ২৩২ টাকার সম্পদ অর্জনে অভিযোগে মামলা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার এ সম্পদ অর্জনের তথ্য মিলেছে। এছাড়া তারিক আহমেদের চারটি ব্যাংক হিসাবে ৬২ কোটি ৬০ হাজার ৯৮৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করার বিষয় তুলে ধরে বলা হয়েছে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ জমা ও উত্তোলন করা হয়েছে এসব ব্যাংক হিসাবে।
দুদক বলছে, এই সন্দেহজনক লেনদেন করে তিনি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২–এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন–এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
তদন্তের বরাতে দুদক বলেছে, তারিক আহমেদের নামে অর্জিত বা মালিকানাধীন স্থাবর সম্পদের মূল্য ২৪ কোটি ৬০ লাখ ২৪ হাজার ৭৭৪ টাকা এবং অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১৯ কোটি ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮৬২ টাকা। মোট সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৩৬ টাকা।
বাকি তিনটি মামলায় স্ত্রী ও দুই কন্যার সঙ্গে তারিক সিদ্দিককেও আসামি করা হয়েছে। দুদকের উপপরিচালক এ কে এম মর্তুজা আলী সাগর বাদী হয়ে করা এ দ্বিতীয় মামলায় তারিক সিদ্দিকের স্ত্রী শাহিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৯৩ হাজার ২১৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া, তার ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৫৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৭ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথা বলেছে দুদক।
তারিক সিদ্দিকের মেয়ে নুরিন তাসমিয়া সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৭ হাজার ১৯২ টাকার অবৈধ সম্পদের মামলা করেছেন দুদকের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন। তার আরেক মেয়ে বুশরা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২ লাখ ৯৭ হাজার ৮৬ টাকার ‘অবৈধ’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছেন দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান।
এসব মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তদন্তকালে নতুন কোনো তথ্য উদঘাটিত হলে অথবা অপরাধে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে মামলায় তা অন্তর্ভুক্ত করা হবে।