ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চলমান সিরিজতো বটেই বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাটে চলছিল রানের খরা। এই সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দুই দল মিলিয়ে কোনো জুটি পারেনি শতরানের ধারেকাছে যেতে। ব্যাটসম্যানদের ভোগান্তির সেই সিরিজেই এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিই পেরিয়ে গেল সেঞ্চুরি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে দুর্দান্ত এই শুরু এনে দেন সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। ষোল তম ওভারে দলের রান স্পর্শ করে তিন অংকের ঘর। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের দুর্দশা শুধু এই সিরিজে নয়, চলছিল অনেক দিন ধরেই। বিশেষ করে টপ অর্ডারে। সেটিই আরেকবার মনে করিয়ে দিয়েছে সৌম্য ও সাইফের এই জুটি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশ শুরুর জুটিতে শতরান পেল ৪৫ ইনিংস পর। উদ্বোধনী জুটিতে শতরান সবশেষ দেখা গিয়েছিল ২০২৩ সালের মার্চে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১০২ রান যোগ করেছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস। সেই জুটির পর এই ম্যাচের আগ পর্যন্ত ৪৫ ইনিংসে কেবল সাতবার অর্ধশত রান ছুঁয়েছে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। এই বছর আগের ১০ ওয়ানডেতে সেরা জুটি ছিল মাত্র ৪৫ রানের। এবার সেই হতাশার অধ্যায় পেছনে পড়ল সৌম্য ও সাইফের ব্যাটে। অথচ প্রথম ম্যাচের উইকেটেই হচ্ছে এই ম্যাচ, যে ম্যাচে ধুঁকেছিল দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই। এই ম্যাচেও উইকেটে টার্ন দেখা গেছে বেশ। তবে আগের চেয়ে এ দিন বল ব্যাটে এসেছে ভালোভাবে। সাইফ ও সৌম্য খেলেছেনও দুর্দান্ত।
ইঙ্গিতটা অবশ্য ছিল শুরুতেই। আকিল হোসেনের প্রথম ওভারেই সাইফ হাসানের দুটি চারে শুরু হয় বাংলাদেশের ইনিংস। আকিলকেই পরে ছক্কায় উড়িয়ে দেন সাইফ। একটু পরে আক্রমণ শুরু করেন সৌম্যও। দুজনের ব্যাটে দলের রান বাড়তে থাকে দ্রুত। ৪৮ বলে ফিফটি করে সৌম্য। ষষ্ঠ ওয়ানডে খেলতে নামা সাইফ প্রথমবার পঞ্চাশে পা রাখেন ৪৪ বলে। সাইফের ছক্কাতেই দলের শতরান আসে ষোড়শ ওভারে। সেখানেই থামেননি দুজন। চোখধাঁধানো সব শটের মহড়ায় দলকে আরও এগিয়ে নেন তারা। ২২তম ওভারে জুটির রান পেরিয়ে যায় দেড়শ। শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রানে ছিন্ন হয় দুজনের বন্ধন। ছয়টি করে ছক্কা ও চারে ৭২ বলে ৮০ রান করে রোস্টন চেইসের বলে সীমানায় ধরা পড়েন সাইফ। ততক্ষণে জুটিতে রেকর্ড হয়ে গেছে আরও কিছু। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে যে কোনো উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি এটিই। আগের সেরা ছিল ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইমরুল কায়েস ও এনামুল হকর ১৫০। সেটিও ছিল শুরুর জুটিতেই। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেরা উদ্বোধনী জুটি এটি। তারা পেরিয়ে গেছেন ১৯৯৯ সালে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ১৭০ রানের জুটি। ২০২০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেটে তামিম ইকবাল ও লিটন দাসের ২৯২ রানের জুটি সবার ওপরে। সাইফের পর এ দিন সেঞ্চুরি করতে পারেননি শেষ পর্যন্ত সৌম্যও। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৮৬ বলে ৯১ করে আউট হয়ে যান তিনি।












