এবারের বিপিএলে ঢাকা দলটির নাম দুর্দান্ত ঢাকা। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে দুর্দান্তর লেশ মাত্রও নেই। এই দলটি এবারের বিপিএলে হেরেই চলেছে। জয় যেন তাদের কাছে সোনার হরিণ। নয় ম্যাচের ৮টিতে হেরে মাত্র দুই পয়েন্ট নিয়ে চট্টগ্রাম এসেছিল দুর্দান্ত ঢাকা। আর এখানে হারের তালিকাটা আরো লম্বা হলো। আগের ৮ ম্যাচের সাথে গতকাল যোগ হলো আরো একটি পরাজয়। ফলে দশ ম্যাচের নয়টিতে হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতেই তাদের অবস্থান। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ঢাকার চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল বরিশালের জন্য। কারন শেষ চারের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে হলে এই ম্যাচে জিততেই হতো তামিমের দলকে। আর ম্যাচে দারুণ এক জয় তুলে নিয়েছে বরিশাল। এই জয়ে দলকে সামনে থেকে দারুনভাবে নেতৃত্ব দয়েছেন অধিনায়ক তামিম। তার ব্যাটে চড়ে বিশাল স্কোর গড়ে বরিশাল। যা পরে বোলারদের জন্য সহায়ক হয়ে উঠে। ম্যাচটি ফরচুন বরিশাল জিতেছে ২৭ রানে। এই জয়ের ফলে ৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে। চট্টগ্রামের পয়েন্টও সমান ১০ হলেও রান রেটে এগিয়ে বরিশাল। তামিম ইকবালের ব্যাটিং এর পর দুই পেসার সাইফউদ্দিন এবং খালেদ আহমেদের আগুন ঝরানো বোলিং বরিশালকে পাইয়ে দেয় সহজ জয়। তামিমের জবাব হিসেবে দারুন লড়াই করেছিলেন ঢাকার আলেক্স রস। কিন্তু তার লড়াই কাজে আসেনি দলের জন্য। সঙ্গীর অভাবে বৃথাই গেল রসের ৪৯ বলে ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংসটি।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা বরিশালকে দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং আহমেদ শেহজাদ। পাওয়ার প্লের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দুজন দারুন ব্যাটিং করেন। উদ্বোধনী জুটিতে যোগ করেন দুজন ৭৬ রান। ২২ বলে ২৬ রান করা শেহজাদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আলাউদ্দিন বাবু। দ্বিতীয় উইকেটে তামিম এবং সৌম্য সরকার মিলে যোগ করেন আরো ৪৮ রান। তামিম যখন ক্রমশ আগ্রাসী হয়ে উঠছিলেন ঠিক তখনই তাকে থামান আলাউদ্দিন বাবু। সাইফ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে থামে তামিমের ৭১ রানের ঝলমলে ইনিংসটি। ৪৫ বলের ইনিংসটিতে ৭টি চার এবং ৪টি ছক্কা মেরেছেন তামিম। এরপর ঝড় তোলার আভাস দিয়েও পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। ফিরলেন ১০ বলে ১৩ রান করে। এরপরই পরের ওভারে ফিরেন সৌম্য সরকার। তার ব্যাট থেকে আসে ২৩ বলে ২৮ রান। এক সময় মনে হচ্ছিল বরিশালের স্কোর দুইশ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু সেটা আর হয়নি। শেষ দিকে সাইফউদ্দিনের ঝড়ে তামিমের দলের সংগ্রহ দাড়ায় ১৮৬। ৬ বলে ২টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৩ রানের ঝড় তুলে অপরাজিত থাকেন সাইফউদ্দিন।
১৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা দুর্দান্ত ঢাকা শুরু থেকেই পড়ে বিপর্যয়ে। প্রথম ওভারেই ১০ রান করে ফিরেন মোহাম্মদ নাঈম। পরের ওভারে সাইফউদ্দিনের জোড়া আঘাত। তিনি ফেরান রেসিংটন এবং সাইফ হাসানকে। ১৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আলেক্স রস এবং উইলিয়ামস মিলে চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধ গড়ার। কিন্তু তাদের সে সুযোগ দেননি খালেদ আহমেদ। তার প্রথম শিকার ১২ রান করা উইলিয়ামস। এরপর দ্রুত মেহরব এবং মোসাদ্দেক সৈকতকেও ফেরান খালেদ। ৩ রান করে ফিরেন আলাউদ্দিন বাবুও।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করছিলেন আলেঙ রস। কিন্তু অপরপ্রান্তে সঙ্গীর অভাবে তিনি পারেননি দলকে জেতাতে। ৪৯ বলে ৫টি চার এবং ৭টি ছক্কার সাহায্যে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকলেও তার দল থামে ১৫৯ রানে। বরিশালের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই পেসার সাইফউদ্দিন এবং খালেদ আহমেদ।