তাঁর কণ্ঠে মুখরিত হবে না আর এই প্রান্তর

| রবিবার , ২৫ জুলাই, ২০২১ at ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ

ভাঙা ভাঙা গলা নিয়ে তার আফসোস ছিল, তবে অর্ধ শতকের বেশি সময় ধরে সেই কণ্ঠে গেয়ে যাওয়া গণমানুষের গানই ফকির আলমগীরকে পৌঁছে দিয়েছে মানুষের হৃদয়ের কাছে। ‘ও সখিনা’ কিংবা ‘মায়ের একধার দুধের নাম’ গানগুলো এ দেশের মানুষকে ঝাঁকড়া চুলের দরাজ গলার এই শিল্পীর কথা মনে করিয়ে দেবে আরও বহুদিন।
গণমানুষের জন্য গাইতেন ফকির আলমগীর। তার গানের পরতে পরতে বাংলার নিপীড়িত, বঞ্ছিত মানুষের কথা। যে কোনো আয়োজনে গগন বিদারী কণ্ঠে মানুষের জন্য গেয়ে উঠতেন তিনি। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রান্তরে প্রায়শই মেহনতি মানুষের কোনো অনুষ্ঠানে কান পাতলেই শোনা যেত ফকির আলমগীরের কণ্ঠ!
সেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে গতকালও ছিলেন ফকির আলমগীর। নিথর দেহে শুয়েছিলেন। যে শহীদ মিনারে কতো শত অনুষ্ঠানে গর্জে উঠেছে ফকির আলমগীরের কণ্ঠ, অথচ সেখানে উপস্থিত থেকেও তার এমন নির্লিপ্ততা যেন মানতে পারছিলেন না সহধর্মিনী সুরাইয়া আলমগীর।মাইক্রোফোন হাতে তিনি বলে উঠলেন, ‘এই শহীদ মিনার আর ফকির আলমগীরের কণ্ঠে, সুরে মুখরিত হবে না। তার মতো বিপ্লবী কণ্ঠে উদ্ভাসিত হবে না এই প্রান্তর। তিনি চলে গেছেন সব বন্ধন ছিন্ন করে।’
তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুরোধ জানালেন, গণসংগীতের প্রজ্জ্বলিত মশাল এতোদিন বয়ে চলেছেন ফকির আলমগীর, তা যেন পরবর্তী প্রজন্ম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেয়। যেন এই ধারার সংগীতের মাধ্যমে মেহনতি মানুষের কথা উচ্চারিত হয়।
এসময় সরকারের কাছে একটি দাবি জানিয়ে সুরাইয়া আলমগীর জানান, ফকির আলমগীর ছিলেন গণমানুষের শিল্পী। তিনি যেমন সাধারণ লোকের জন্য শত শত গান করেছেন, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের সময় তার গান বীর যোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছে। শোষণ, অন্যায়-অবিচারের কথা তিনি গানে গানে বলেছেন, তার মতো এমন বলিষ্ঠ কণ্ঠযোদ্ধাকে যেন পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেন নতুন প্রজন্ম তার মতো একজন আদর্শ শিল্পীকে চিনতে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণমানুষের সেসব গান
পরবর্তী নিবন্ধড্রোন ব্যবহার করে কৃত্রিম বৃষ্টি নামাল দুবাই