বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা ক্রিকেটার জাহানারা আলমের যৌন হয়রানির সব অভিযোগই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। দেশে এসে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন মঞ্জুরুল। সাবেক এই পেসার এখন কাজ করছেন চীনে নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে। ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাহানারা দাবি করেন, মঞ্জুরুল তাঁর কাছে একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইতেন। এ বিষয়ে মঞ্জুরুল বলেন, ম্যানেজার হিসেবে দলের সঙ্গে থাকা ফিজিওর মাধ্যমেই তিনি এসব তথ্য পেতেন। তবে কখনো সরাসরি কোনো খেলোয়াড়কে এসব বিষয়ে তিনি নিজে জিজ্ঞেস করেননি। জাহানারাকে এসব জিজ্ঞেস করার বিষয়ে মঞ্জুরুল বলেন, না, একদম না। আমি কোথায় বলেছি, কবে বলেছি সেটার প্রমাণটা কোথায়। তার অন্য সতীর্থরা কি বলে দেখুন।
জাহানারার অভিযোগ ছিল, মঞ্জুরুল ইসলাম প্রায়ই খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেওয়ার নামে শারীরিকভাবে স্পর্শ করতেন, এমনকি আলিঙ্গন বা বুকে টেনে নিতেন। নারী ক্রিকেটারদের এভাবে খারাপ স্পর্শ করার অভিযোগটিও সরাসরি অস্বীকার করেছেন মঞ্জুরুল। এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় অথবা বিসিবির যেকোনো তদন্তের মুখোমুখি হতে তিনি তৈরি আছেন বলে জানিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এই পেসার বলেন, আমি যেকোনো সময় বাংলাদেশে এসে বসতে তৈরি আছি। আমাকে যখন বলবে, তখনই আমি আসব। আমাকে তদন্ত কমিটি যা বলবে, তাই করব। করে যাব।
সাক্ষাৎকারে জাহানারা দাবি করেন, ২০২২ সালে বিসিবিতে একটি চিঠি দিয়ে প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীকে সবকিছু জানিয়েছেন। তবে মঞ্জুরুলের দাবি, তাঁকে বোর্ডের পক্ষ থেকে তখন যৌন হয়রানি করার বিষয়ে কখনোই কিছু বলা হয়নি। শুধু তার বিরুদ্ধেই কেন অভিযোগ, এ প্রসঙ্গে মঞ্জুরুল বলেন, এটা আমি জানি না। আমি বলতে পারবো না। আমার মূল সমস্যা ছিল আমি দলে নিয়মশৃঙ্খলা আর আইনকানুনের কথা বলতাম। এসব বিষয়ে আমি কঠোর ছিলাম। খাওয়ার ব্যাপারে কঠোর থাকতাম। বাইরের কিছু খেলে ওদেরই ক্ষতি। এটা যদি খারাপ কাজ হয়, এটার জন্য যে শাস্তি হয় তা নিতে আমার কোনো সমস্যা নেই।’ শুধু মঞ্জুরুলের বিরুদ্ধেই নয়, জাহানারা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁর ক্যারিয়ার ‘ধ্বংস করে দেওয়ার’ অভিযোগও তুলেছেন। বিশেষ করে ২০২১ সাল থেকে পরের দেড় বছর পর্যন্ত, সব ঘটনা বিসিবি ও নারী উইংয়ের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েও বিশেষ কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নারী দলের সাবেক এই অলরাউন্ডার। মঞ্জুরুল ইসলাম ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ১৭টি টেস্ট ও ৩৪টি ওয়ানডে খেলেছেন মঞ্জুরুল। অবসরের পর সাবেক এই বাঁহাতি পেসার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অধীনে বিভিন্ন দলের কোচিং ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ছিলেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের নির্বাচকের দায়িত্বে। একই সময়ে বিভিন্ন সিরিজে দলের ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।











