বান্দরবানের থানচিতে চিংমা (২৯) নামে এক নারীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ঐ নারীর স্বামী সন খেয়াং বাদী হয়ে থানায় হত্যাকাণ্ডের একটি মামলা করেছে। নিহতের স্বজন যেভাবে এজাহার দিয়েছে সেভাবেই মামলাটি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো.শহীদুল্লাহ কাওছার। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বান্দরবান জেলা প্রশাসন সম্মেলনে কক্ষে খেয়াং সমপ্রদায়ের নারীর মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়াতে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেছেন। এসময় অন্যদের মধ্যে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আবু তালেব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. আবদুল করিম, জেলা প্রশাসন ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ভিকটিমের বিষয়ে তৎপর রয়েছে প্রশাসন ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। সকলের সম্মিলিতভাবেই এটির সুষ্ঠু তদন্ত হবে। এ ঘটনাটি যদি হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকে তাহলে জড়িত হত্যাকারীদের আমরা বিচারের আওতায় আনবো। এখনো পর্যন্ত বলতে পারছিনা মৃত্যুর রহস্যটা আসলে কি। ময়না তদন্তের পর রিপোর্ট পেলে বলতে পারবো, তখন প্রয়োজনে আবার মিডিয়ার মুখোমুখি হব। তবে এটি নিয়ে যেন কোনো বিভ্রান্ত না ছড়ায় সেদিকে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী এবং মানবাধিকার কর্মীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ কাওছার আরও বলেন, লাশের চোখে মুখে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিহত স্বজনদের সম্মুখে পুলিশের নারী সদস্যরা লাশের সুরতহাল ও মামলার বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছেন। চিকিৎসকের তদন্ত রিপোর্টের পর হত্যাকাণ্ডের কারণ এবং ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বান্দরবানে মিছিল–সমাবেশ করেছে পাহাড়ের সংগঠনগুলো। উজানী পাড়া থেকে মিছিলটি বেড়িয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
প্রসঙ্গত: গত রোববার সকালে জুম চাষের জন্য পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে যায় তিন্দু ইউনিয়নের মংখ্যং পাড়া এলাকার বাসিন্দার সন খেয়াং এর স্ত্রী চিংমা খিয়াং (২৯)। দুপুর পেরুনোর পরও বাড়িতে না ফেরায় আত্মীয় স্বজন থেকে খবর পেয়ে পাড়াবাসীরা মিলে পাহাড়ে খুঁজতে যায়। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি এক পর্যায়ে জঙ্গলের ভিতরে পাহাড়ী ঝিরির পাশে লাশ দেখতে পায়। স্বজনরা বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।