তথ্য গোপন করে রোহিঙ্গা নাগরিক পটিয়া থেকে সৌদিতে

উপজেলা নির্বাচন অফিসে অভিযোগ

পটিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৫ নভেম্বর, ২০২১ at ৮:৫৯ পূর্বাহ্ণ

তথ্য গোপন করে পটিয়া থেকে এক রোহিঙ্গা নাগরিক এনআইডি কার্ড নিয়ে মরুর দেশ সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার সকালে পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবরে পটিয়া পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের স্থানীয়রা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই রোহিঙ্গা নাগরিক আলী হোসেন এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে বর্তমানে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছেন। তার পিতা আবদুর রহিম ও মাতা মৃত মাহমুদা খাতুন কেউই স্থানীয় বাসিন্দা নন। পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর খালেকের সুপারিশে এবং তথ্য গোপন করে এনআইডি কার্ড পেয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। জালিয়াতির মাধ্যমে কাউন্সিলরের সনদ পেয়ে তা প্রদর্শন করে পাসপোর্টও সংগ্রহ করেছেন আলী হোসেন। ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট নির্বাচন অফিস রোহিঙ্গা নাগরিক আলী হোসেনকে পটিয়া নির্বাচন অফিস এনআইডি কার্ডটি প্রদান করে। এনআইডি নং- ৬৪৬৩৬৪২৭২৫। জন্ম তারিখ ১৯৬৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের পর দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়ায় অসংখ্য রোহিঙ্গা ছড়িয়ে রয়েছে। অনেকে বিয়ে করে জায়গা ক্রয় ও বাড়ি নির্মাণ করে ফেলেছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে জন্মনিবন্ধন, জাতীয় সনদ ও প্রত্যায়ন পত্র নিয়ে গোপনে ভোটারও হয়েছেন। অনেকে পাসপোর্ট করে বিভিন্ন দেশে ঢুকে পড়ছেন। পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও, পৌর সদরের কাগজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় তাদের বসতি রয়েছে। এ রোহিঙ্গারা জন্মসূত্রে মিয়ানমারের নাগরিক হলেও স্থানীয়ভাবে তারা বিয়ে করে আত্মীয়তা করেন। এরপর জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে এনআইডি কার্ড তৈরি করান। পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নুর আহমদ সওদাগর বাড়ির দক্ষিণ বিল এলাকার রোহিঙ্গা আলী হোসেন বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পৌরসভার কাগজীপাড়ায় রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়ার বিষয়টি ফাঁস হলে এলাকার লোকজনের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পটিয়া পৌরসভা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে সনদ সংগ্রহ করে পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাড়িয়ে জমাচ্ছেন। যার কারণে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনোদিন এ ধরণের জালিয়াতি করিনি। আমি এ অভিযোগের অবশ্যই সত্যতা যাচাই করবো।
পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়ার বিষয়ে স্থানীয় লোকজন আমাকে ইতোপূর্বে একাধিকবার জানিয়েছেন। তবে কিভাবে সনদ পেয়েছেন তা আমি জানি না। সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেক থেকে সনদটি গ্রহণ করেছেন।
পটিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরাফাত আল হোছাইনী জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা নাগরিক ভোটার হওয়া সংক্রান্তে একটি অভিযোগ স্থানীয় লোকজন নির্বাচন অফিসে জমা দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তপূর্বক সত্যতা পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবানৌজা শহীদ মোয়াজ্জমকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান
পরবর্তী নিবন্ধশ্রীলঙ্কার কাছে হেরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিদায়