দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নবদিগন্তের দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে চুয়েটে প্রতিষ্ঠিত শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধনের মাধ্যমে। আগামীকাল বুধবার দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সর্বপ্রথম স্থাপিত চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন সকাল ১০টায় তিনি গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এই প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। সহকারী পরিচালক গণসংযোগ মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের সাথে যুক্ত শেখ জামাল ডরমিটরি ও রোজী জামাল ডরমিটরি একই সাথে উদ্বোধন করা হবে। অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। স্বাগত বক্তব্য দেবেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানটি গণভবন, আইসিটি মন্ত্রণালয় ও চুয়েট তিন প্রান্ত থেকে একযোগে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যুক্ত থাকবে। চুয়েট প্রান্ত থেকে যুক্ত থাকবেন এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি, চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকসহ সরকারি কর্মকর্তা কর্মকর্তাবৃন্দ।
চুয়েট শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্প : বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের সুযোগ আরও অবারিত করার মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের আয় প্রত্যাশিত মাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে চুয়েটে সর্বপ্রথম শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১৭.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়। উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হচ্ছে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গবেষণা উদ্ভাবন এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য একটি
কার্যকরী ব্যবস্থা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ স্নাতক তৈরির মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই ইনকিউবেটর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
যা থাকছে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরে : শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর প্রকল্পের আওতায় চুয়েট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রায় ৫ একর (৪.৭ একর) জমির উপর ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১০ তলাবিশিষ্ট একটি ইনকিউবেশন ভবন এবং ৩৬ হাজার বর্গফুটের ৬ তলাবিশিষ্ট একটি মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ইনকিউবেশন ভবনের মধ্যে রয়েছে- স্টার্টআপ জোন, আইডিয়া/ ইনোভেশন জোন, ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিক জোন, ব্রেইনস্ট্রর্মিং জোন, ই-লাইব্রেরি, ডাটা সেন্টার, রিসার্চ ল্যাব, বঙ্গবন্ধু কর্নার, প্রদর্শনী সেন্টার, ভিডিও কনফারেন্সিং কক্ষ, সভাকক্ষ প্রভৃতি। উদ্যোক্তা ও গবেষকদের কাজের সুবিধার্থে একটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (অও) ল্যাব, একটি মেশিন লার্নিং ল্যাব, একটি বিগ ডাটা ল্যাব, অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকবোন, একটি সাব-স্টেশন ও সোলার প্যানেল রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও আইটি ফার্মের জন্য পৃথক কর্নার, অত্যাধুনিক সাইবার ক্যাফে, ফুড কোর্ট, ক্যাফেটেরিয়া, রিক্রিয়েশন জোন, মেকার স্পেস, ডিসপ্লে জোন, প্রেস/ মিডিয়া কাভারেজ জোন, নিজস্ব পার্কিং সুবিধা প্রভৃতি। অন্যদিকে মাল্টিপারপাস প্রশিক্ষণ ভবনে ২৫০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন সুসজ্জিত অডিটোরিয়াম এবং ৩০ জনের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন পৃথক ৮টি কম্পিউটার ল্যাব কাম সেমিনার কক্ষ রয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪ তলাবিশিষ্ট পৃথক দুইটি (১টি নারী ও ১টি পুরুষ) আবাসিক ডরমিটরি ভবন নির্মিত হয়েছে। প্রতিটি ডরমিটরিতে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এছাড়া দুুটি মিনি সুপার কম্পিউটার সম্বলিত অত্যাধুনিক গবেষণা ল্যাব শীঘ্রই স্থাপিত হতে যাচ্ছে।