তত্ত্বাবধায়ক নয়, ইসলামী আন্দোলনের দাবি জাতীয় সরকার

| সোমবার , ১৯ জুন, ২০২৩ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

দলীয় সরকারের অধীনে সামনে আর কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আমির চরমোনাইয়ের পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম জাতীয় সরকারের দাবি তুলেছেন। অন্য বিরোধী দলগুলো নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে দাবি তুলেছে, তাতে সায় নেই তার। গতকাল পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের এই অবস্থান ঘোষণা করেন তিনি। গত ১২ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী ফয়জুল করিমের ওপর ‘হামলার’ অভিযোগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগ দাবিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে আসেন চরমোনাইয়ের পীর। খবর বিডিনিউজের।

রেজাউল করিম বলেছেন, বর্তমান সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চাই। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের যে ব্যবস্থা সংবিধানে করা হয়েছে, সেটি দেশবাসী মেনে নেবে না বলেও ঘোষণা করেন তিনি। জাতীয় সরকারের প্রস্তাব তুলে ধরে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। জাতীয় সরকার গঠিত হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে। কোনো কারণে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে অবশ্যই নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

বর্তমান মন্ত্রিসভার কেউ নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারে থাকতে পারবেন না এবং জাতীয় সরকারে যারা থাকবেন তারা জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। এটাও ইসলামী আন্দোলনের প্রস্তাব।

কেন জাতীয় সরকার চাইছে : এই প্রশ্নে দলের আমির বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বললেও আমরা জাতীয় সরকারের কথা বলছি। বিগত দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে কয়টি নির্বাচন হয়েছে সেখানে প্রত্যেক নির্বাচনে যারা হেরেছে তারা নির্বাচনের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছে। আমরা চাইছি এমন একটা সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক যেখানে সবার অংশগ্রহণ থাকবে বিধায় কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

জাতীয় সরকারে তারা কাদের চাইছেন সে প্রশ্নে চরমোনাইয়ের পীর বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল, দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবী মহল এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিগণের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুতই আমরা জাতীয় সরকারে কারা থাকবেন এবং সরকার কাঠামো কি হবে তা প্রকাশ করব। এই দাবি নিয়ে আগামী ২৪ জুন মতবিনিময় করার ঘোষণাও আসে সংবাদ সম্মেলনে।

এই সরকারের অধীনে আর ভোট নয় : দলের অবস্থান তুলে ধরে রেজাউল করিম বলেন, দল হিসেবে সামনে দলীয় সরকারের অধীনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলছি, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না, হয় নাই, বিধায় এই দলীয় সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। সিইসির পদত্যাগ দাবি : বরিশালে ফয়জুল করিমকে ঘুষি দেওয়ার ঘটনায় সিইসির মন্তব্য ‘ওনি কি ইন্তেকাল করেছেন?’ ক্ষুব্ধ করেছে ইসলামী আন্দোলনকে। চরমোনাইয়ের পীর বলেন, আমরা অবিলম্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চাই। তিনি পদত্যাগ করতে না চাইলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় দ্রুত তার অপসারণ চাই। এই দাবিতে আগামী ২১ জুন নির্বাচন কমিশন কার্যালয় অভিমুখী মিছিলের ডাকও দেয় ইসলামী আন্দোলন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসলামী শিক্ষার বিস্তারে দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে : সৌদি রাষ্ট্রদূত
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে যুবলীগ নেতা ইউসুফ হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার