নগরীর বালুছড়া এলাকায় ফোর এইচ গার্মেন্টসে নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের সময় ধসে পড়েছে। এতে ৬ জন নির্মাণ শ্রমিক আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুর একটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শ্রমিকদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলেন মো. সুমন (৩২) ও আবুল কালাম (৪০)। রাত পৌনে ৯টার দিকে জানতে চাইলে, চমেক হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে চিকিৎসাধীন সুমন ও কালাম শংকামুক্ত বলে জানিয়েছেন বায়েজিদ থানার এসআই সুমন বড়ুয়া শাপলা। তিনি বলেন, তাদের একজন ২৭ এবং অপরজন ২৮নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে নির্মাণাধীন ছাদ ধসে পড়ার পর দুর্ঘটনাস্থল দেখতে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়নি গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। বিকেল তিনটার দিকে ছবি না তোলার আশ্বাসে ভেতরে দুই সংবাদকর্মীকে প্রবেশের অনুমতি দেন কারখানা ম্যানেজার ইয়ার মো. জুয়েল। তিনি জানান, আমাদের গার্মেন্টেসে স্বাভাবিক কাজকর্মী চলছে। যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটি আলাদা একটি ভবনে। ধসে যাওয়া ভবনটির নিচতলা জেনারেটর সংযোজনের করা হবে। যে কারণে উচ্চতা বেশি। সোমবার সকাল থেকে ছাদ ঢালাই শুরু হয়। ছাদের অর্ধেক ঢালাই সম্পন্ন হওয়ার সময় দুপুর একটার দিকে হঠাৎ ধসে পড়ে। এসময় আমরা ওই দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৬ জনকে উদ্ধার করি। কারখানায় সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম থাকে। ঘটনার পর উদ্ধার হওয়া চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্য দুইজনকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ঠিকাদারের মাধ্যমেই ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। কেন দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি ঠিকাদারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ভুইয়া দৈনিক আজাদীকে বলেন, ভবনটি ঠিকাদারের মাধ্যমে নির্মাণ করা হচ্ছিল বলে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। নিচতলার উচ্চতা বেশি ছিল। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, ছাদ ঢালাইয়ের জন্য যে সেন্টারিং করা হয়েছে, তাতে ত্রুটি ছিল। যে কারণে ধসে পড়েছে। তিনি বলেন, ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে গেলেও এর আগেই কারখানা কর্তৃপক্ষ আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফায়ার সার্ভিসের আরেক কর্মকর্তা বলেন, ভবনটির নিচতলার উচ্চতা প্রায় ২০ ফুটের কাছাকাছি রাখা হয়। উচ্চতা বেশি থাকায় দুইস্তর করে সেন্টারিং করা হয়েছিল। নিচের স্তরে কিছু স্টিল স্ট্রাকচার থাকলেও উপরের স্তরে শুধু বাঁশের খুঁটি দেওয়া ছিল। কোনো এক স্থানের সেন্টারিংয়ের লোডে ঘাটতি ছিল। এতে একদিকে ধস শুরু হওয়ায় ঢালাইকৃত পুরো অংশই ধসে পড়েছে। পুরোটাই স্টিল স্ট্রাকচারের হলে হয়তো দুর্ঘটনা ঘটতো না।
এ ব্যাপারে ভবন নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার তাকিয়া কন্সট্রাকশনের মালিক মো. নয়ন দৈনিক আজাদীকে জানান, সকাল ৭টা থেকে ছাদ ঢালাই শুরু হয়েছে। ছাদের চারটি খোলের মধ্যে দুইটির ঢালাই শেষ হয়েছে। ঠিক জোহরের আজানের সময় তৃতীয়টির বিম ঢালাই চলাকালীন হঠাৎ ঢাকাইকৃত অংশটি ধসে পড়ে। ঢালাইয়ের জন্য আলাদা কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে শ্রমিকগুলো আনা হয়েছিল। যে কারণে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।