মুজিবশতবর্ষে চিরঞ্জীব নেতা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ভালোবাসায় ও স্বাধীন বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে মোদিকে বহনকারী বিমান।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় অভ্যর্থনা পর্ব শুরু হবে কিছুক্ষণের মধ্যেই। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতার পর, তিনি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাবেন। এর আগে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি ঢাকায় আসার আগের একটি ছবি শেয়ার করেন।
শেয়ার করা ওই ছবির ক্যাপশনে মোদি লিখেছেন, ‘ঢাকার জন্য রওনা হলাম। এই ভ্রমণ বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুত্ব আরও গভীরতর করবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) এক ভিডিও বার্তায় নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আগামীকাল জাতীয় দিবস উদযাপনে অংশ নেওয়ার জন্য অধীর অপেক্ষায় আছি, যাতে শততম জন্মবার্ষিকীতে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেও স্মরণ করা হবে। গত শতাব্দীর অন্যতম শীর্ষ নেতা বঙ্গবন্ধু, যার জীবন ও আদর্শ এখনও লাখ লাখ মানুষকে অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে।’
ওই বিবৃতিতে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যও অধীর অপেক্ষার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মোদি বলেন, ‘করোনা মহামারির এই সময়ে এমন এক প্রতিবেশী বন্ধু দেশে সফর করতে পেরে আমি আনন্দিত, যার সঙ্গে ভারতের গভীর সাংস্কৃতিক, ভাষাগত এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক বিদ্যমান।’
সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জে মন্দির পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে মোদি বলেন, ‘সাতক্ষীরায় পৌরাণিক যশোরেশ্বরী মন্দিরে মা-কালীর প্রতিও পূজা দিতে চাই আমি। বিশেষ করে ওড়াকান্দিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের সঙ্গেও মিথস্ক্রিয়া করতে চাই আমি, যেখানে শ্রী হরিচরণ ঠাকুর পবিত্র বাণী প্রচার করেছিলেন।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ডিসেম্বরে ভার্চুয়াল বৈঠকের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার বিশেষ আলাপ-আলোচনা হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হবে।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাপ্নিক নেতৃত্বে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ও উন্নয়নমূলক অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানানোয় আমার সফর সীমাবদ্ধ থাকবে না; এর সঙ্গে এই অর্জনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও থাকবে।’ এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও সংহতির বার্তাও সফরে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পাশাপাশি বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তিতে মোদির এ সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।