সাতকানিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে দগ্ধ ড্রাইভার মো. হেলাল উদ্দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানী ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে তিনি মারা যান।
এর আগে গত বৃস্পতিবার (৮ জুলাই) রাতে সাতকানিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চরপাড়া জিন্নাত আলী সিকদার বাড়ির মৃত হামিদ আলীর পুত্র সৈয়দ আহমদের রান্না ঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে ড্রাইভার হেলাল উদ্দিনসহ ৫ জন দগ্ধ হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া ড্রাইভার মো. হেলাল উদ্দিন চরপাড়ার জিন্নাত আলী সিকদার বাড়ির মৃত আবদুস শুক্কুরের পুত্র।
সাতকানিয়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুল আলম সোহেল জানান, সৈয়দ আহমদ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনু ফকিরের দোকান এলাকা থেকে বাড়ির জন্য পদ্মা কোম্পানির একটি গ্যাস সিলিন্ডার নেন।
ওই দিন রাত সাড়ে দশটার দিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে বেড়াতে আসা তার মেয়ে খালেদা বেগম রান্না ঘরে গেলে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে দগ্ধ হন।
এসময় খালেদার চিৎকার শুনে ঘরে থাকা তার স্বামী লোহাগাড়ার কিল্লার আন্দর এলাকার মো. শাহ আলম ও তাদের পুত্র মো. শাহনেওয়াজ দৌড়ে গিয়ে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। তখন তারা দুইজনও দগ্ধ হন।
এক পর্যায়ে দগ্ধ স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশী ড্রাইভার মো. হেলাল উদ্দিন ও দেলোয়ার হোসেন ছুটে গিয়ে তাদের বাঁচানোর চেষ্টা চালান। এসময় হেলাল ও দেলোয়ারও দগ্ধ হন।
পরে খবর পেয়ে সাতকানিয়া ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি নিক্ষেপ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর দগ্ধ হয়ে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় তাদের।
পরে ওইদিন রাতেই তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতাল থেকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন হেলাল উদ্দিন মারা যান।
দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া হেলাল উদ্দিনের চাচাতো ভাই মো. আবছার জানান, দগ্ধ হওয়া পাঁচজনের মধ্যে হেলালের অবস্থা খারাপ ছিল। তিনি অন্যান্যদের চেয়ে অনেক বেশি পুড়েছিল। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
আবছার আরো জানান, ৪ ভাই ২ বোনের মধ্যে হেলাল সবার ছোট। হেলালের ১০ মাস বয়সী ১টি ছেলে ও ৪ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। হেলালের লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে রাতেই এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল মজিদ ওসমানী জানান, অগ্নিদগ্ধদের মধ্যে হেলাল উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। অন্যান্যদেরও শ্বাসনালীসহ অনেক স্থান পুড়েছে।