চলতি মাসের ২৭ তারিখ এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের অপেক্ষায় ছিল মো. রোহান (১৬)। ছোট ভাই অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মো. রিপন (১৪)। দুইজনই পটিয়ার মাইফুলা কবীর কারিগরি স্কুলের শিক্ষার্থী। পটিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ ঘাটা পেয়ার মোহাম্মদের বাড়ির দিনমজুর হোসাইন মিয়ার এই দুই পুত্র অভাবের সংসারের হাল ধরতে রাজধানী ঢাকায় যায়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সেখানে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে বড় ভাই রোহান খুন ও ছোট ভাই রিপন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুণছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে দুইভাই ঢাকার নারায়নগঞ্জে টিকে গ্রুপের একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতে যায়। গত সোমবার রাতে তারা সামান্য কিছু নগদ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন নিয়ে ঢাকার পথে রওয়ানা দেয়। ভোর ৪টায় তারা কাঁচপুর নামে। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়া মাত্রই ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। তারা দুইভাইকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ও নগদ টাকা যা ছিল নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে বড় ভাই রোহান প্রাণ হারায় ও ছোট ভাই রিপন গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
দক্ষিণ ঘাটার কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি জানান, অল্প কিছু টাকা ও অল্প দামের একটি মোবাইল ফোন রক্ষা করতে গিয়েই ঢাকার কাঁচপুরে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ হারালো রোহান। রিপনের অবস্থাও আশঙ্ক্ষাজনক বলে জেনেছি। মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে তাদের বাবা–মা ১০ বছরের আরেক ভাইকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় ছুটে গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শফিউল আলম দৈনিক আজাদীকে জানান, রোহান ও রিপনের বাবা দিনমজুরের কাজ করে। পরিবারটি খুবই অস্বচ্ছল। বড় ছেলের মৃত্যু ও মেঝ ছেলে গুরুতর আহত হওয়ার খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বালির বাঁধের মত হতদরিদ্র পরিবারটির সব স্বপ্ন ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে।