হাসিনার রায়ের তারিখ ঘোষণার দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কার্যক্রমে নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৪৩ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিয়েছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপির পাঠানো এক বার্তায় ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের তথ্য জানানো হয়েছে। ডিএমপি বলছে, গ্রেপ্তাররা নাশকতার চেষ্টা চালিয়েছেন ও ঝটিকা মিছিলের সঙ্গে জড়িত আছেন। তবে তাদের বিস্তারিত নাম–পরিচয় জানানো হয়নি। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
এদিন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে মিছিল থেকে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগ অফিসে এই হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫–২০ জনের একটি দল আওয়ামী লীগ অফিসের কয়েকটি ম্যুরাল ভাঙচুর করে। পরে তারা ওই ভবনের চতুর্থ তলার ফাঁকা জায়গায় কাঠ ও বিভিন্ন জিনিসপত্র জড়ে করে আগুন লাগিয়ে দেয়। কিছু ব্যানার স্তুপ করে তাতেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় নিচ থেকে সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
এদিন সকাল থেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগানসহ দলটির কার্যালয়ের আশেপাশে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মিছিল করতে দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও ওই এলাকায় কয়েকদফা টহল দিচ্ছিলেন, এর মধ্যে বেলা ১টার পর মিছিলসহ একটি দল কার্যালয়টির ভেতরে গিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় তারা ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’; ‘গোপালগঞ্জের গোলাপি আর কতকাল জ্বালাবি’, ‘আওয়ামী লীগের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ সহ নানান স্লোগান শোনা যায়।
ওই সময়ে এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো খবর নেই বলে জানান পল্টন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুজ্জামান শেখ। তিনি বলেন, ভাঙচুর বা আগুন দেওয়ার খবর আমাদের জানা নেই। তবে পল্টন থানার ডিউটি অফিসার এসআই নিশাত বলেন, গুলিস্তানে আওয়ামী পার্টি অফিসের ভেতরে কিছু মানুষ কাঠ দিয়ে আগুন ধরিয়েছিল আর সামনে কিছু ভাঙচুর হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সেটি বড় কোনো আগুন নয়।
বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় মৃত্যু : রাজধানীর মিরপুর বেড়িবাঁধে সড়কের পাশে রাখা একটি বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় স্থানীয়দের ধাওয়ায় তুরাগ নদে পড়ে একজনের মৃত্যু হওয়ার কথা বলছে পুলিশ। এ ঘটনায় আরেকজনকে ধরে ফেলে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর বেড়িবাঁধের তামান্না পার্কের সামনে পার্ক করে রাখা কিরণমালা পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগের সময় এ ঘটনা ঘটে। তবে নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানাতে পারেনি শাহ আলী থানা পুলিশ।
এ থানার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, বাসে আগুন লাগিয়ে পালানোর সময় জনগণের ধাওয়ায় একজন তুরাগ নদীতে পড়ে যান। পরে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। একই সময় স্থানীয়দের হাতে রুদ্র মুহাম্মদ (২০) নামে আরেকজন আটক হয়। পরে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাকিল বলেন, বাসটিতে আগুন লাগানোর সময় স্থানীয়রা দুজনকে ধাওয়া দেয়। এ সময় একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে, আরেকজন তুরাগ নদে ঝাঁপ দেয়। পরে তাকে পানি থেকে নিথর অবস্থায় তোলা হয়।
এদিকে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে বিভিন্ন সংগঠনের হুঁশিয়ারির মধ্যে রাজধানীর তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মধ্যরাতে হামলা–ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ বলছে, হামলা–ভাঙচুরের খবর তাদের কাছে নেই। তবে সন্দেহভাজন একজনকে ধরে পুলিশে দিয়েছে এনসিপির নেতা–কর্মীরা। ওয়ার্কার্স পার্টি পলিটব্যুরো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, বুধবার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মব সন্ত্রাসীরা ওয়ার্কার্স পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।









