করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগে ঢাকার প্রাভা হেলথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে একটি নালিশি মামলা দায়ের হয়েছে। তারা হলেন, প্রাভা হেলথের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সিমিন এম. আকতার, সিনিয়র পরিচালক ডা. জাহিদ হোসেইন এবং জুনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার রেজোয়ান আল রিমন। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিলের আদালতে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাবেক চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুস সাত্তার মামলাটি দায়ের করেন।
ভিকটিম আইনজীবী আবদুস সাত্তার দৈনিক আজাদীকে বলেন, আদালত আমার জবানবন্দি রেকর্ড করে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। তিনি আরো বলেন, আসামিরা আমার কাছ থেকে নেওয়া স্যাম্পল অনুযায়ী রিপোর্ট প্রস্তুত না করে প্রতারণামূলকভাবে বিশ্বাস ভঙ্গ করে মনগড়াভাবে ভুয়া কোভিড টেস্ট রিপোর্ট প্রদান করেন। এর মাধ্যমে আমাকে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেন। তাদের এ ধরনের কাজ অপরাধমূলক প্রাণহানির অপচেষ্টাও। যা দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৩০৪এ/৫১১/১০৯ ধারা অনুযায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আবদুস সাত্তার বলেন, আসামিরা এরকম আরো অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করেছেন। এতোদিন পরে কেন মামলা দায়ের করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, আসামিরা তৎকালিন ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় ছিলেন। এ জন্য ঘটনার পরপর মামলা দায়ের করা সম্ভব হয়নি।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৬ মার্চ আবদুস সাত্তার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ৯ মার্চ তিনি ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এনজিওগ্রাম করার জন্য যান। সে সময় দেশজুড়ে করোনা মহামারী চলছিল। এনজিওগ্রামের আগে কোভিড টেস্ট করানোর জন্য তিনি বনানীর প্রাভা হেলথ নামের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যান। ২০ মার্চ তাদের নির্ধারিত ৩ হাজার ৪৭৫ টাকা জমা দিয়ে তিনি প্রভা হেলথের মিরপুর কালেকশন সেন্টারে কোভিড পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন। পরদিন তাকে দেওয়া প্রতিবেদনে তিনি করোনায় আক্রান্ত বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনটিতে ডা. জাহিদ হোসাইন ও রেজোয়ান আল রিমনের নাম ও সই ছিল।
আরজিতে আরো বলা হয়, ওই প্রতিবেদন দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত আবদুস সাত্তার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু পরবর্তীতে নিজের মধ্যে করোনার কোনো উপসর্গ না দেখে সন্দেহ হলে তিনি ভিন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে আবার নমুনা দেন। সেখান থেকে তিনি করোনায় আক্রান্ত নন বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়।