ঢাকার ক্রেতারা চট্টগ্রামে

কোরবানির কাঁচা চামড়া বিক্রি শুরু, আড়তগুলো সরগরম

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৪ জুন, ২০২৫ at ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে পুরোদমে কোরবানির কাঁচা চামড়া বিক্রি শুরু হয়েছে আড়তগুলোতে। ঢাকার ক্রেতারা (ট্যানারি মালিক ও তাদের প্রতিনিধিরা) চট্টগ্রাম এসে আড়তে আড়তে ঘুরছেন। তাদের পূর্বের পরিচিত আড়তদারসহ বিভিন্ন আড়তে দরদাম করছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের আড়তদাররা। এদিকে চট্টগ্রামের একটি মাত্র ট্যানারিরিফ লেদারও চট্টগ্রামের আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া কেনা শুরু করেছে। গতকাল থেকেই চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো, মুরাদপুরবিবিরহাট, হামজারবাগের আড়তগুলো ক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বেশ কয়েকজন ট্যানারি মালিক চট্টগ্রাম এসে চামড়া ক্রয় করেছেন বলে জানিয়েছেন আতুরারডিপোর আড়তদাররা।

এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মুসলিম উদ্দিন গতকাল আজাদীকে বলেন, ঢাকার বেশ কয়েকজন ক্রেতা এসেছেন। তারা আড়তে আড়তে ঘুরে তাদের পছন্দের ভালোমানের চামড়া খুঁজে নিচ্ছেন। ঢাকার আর এস এম লেদার আজকে (গতকাল শুক্রবার) ১৫ হাজার চামড়া নিয়েছে। ট্রাকে তুলে দেয়া হয়েছেঢাকায় নেয়ার জন্য। ঢাকার আরো একজন বড় ক্রেতা খোকন ট্যানারি ও পান্না লেদারের মালিক আকবর সাহেব আজকে (গতকাল শুক্রবার) এসেছেন। তিনি প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ হাজার চামড়া নেন। তার লোক আগে পাঠিয়ে দিয়েছেন চট্টগ্রামে। তারা বিভিন্ন আড়তে চামড়া দেখে রেখেছেন। এবারও ১৫ থেকে ২০ হাজার চামড়া নিবেন তিনি।

কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির নেতা মুসলিম উদ্দিন আরো বলেন, চট্টগ্রামের রিফ লেদার প্রতি বছর ১ লাখ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করে থাকে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ৪০ হাজার নেয় তারা। তারা কেনা শুরু করেছে। আমার নিজের আড়ত থেকে ৭ হাজার কিনেছে। বাকি গুলো অন্যান্য আড়ত থেকে নিয়ে থাকে। ঢাকার আরেক ক্রেতা দুলাল চেয়ারম্যান শনিবার (আজকে) আসবেন বলে জানিয়েছেন। ঢাকার আরো বেশ কয়েকটি ট্যানারি আগে থেকেই বেশ কয়েকটি আড়তের সাথে কথাবার্তা বলে রেখেছে। ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি প্রতি বছর কিছু আড়তের সাথে কথাবার্তা বলে রাখে। কোরবানির পর তারা এসে আড়ত থেকে চামড়া গুলো নিয়ে যায়।

প্রতিটি চামড়ায় ২০ থেকে ৩০ টাকা লাভ হওয়ার কথা জানিয়ে মুসলিম উদ্দিন বলেন, সরকার চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করে দেয়সেই দামে আমরা বিক্রি করতে পারি না। ট্যানারি মালিকরা সেই দামে চামড়া নেন না। আমরা আত্মীয়স্বজনবন্ধুবান্ধব থেকে টাকা ধার করে যেভাবে চামড়া সংগ্রহ করি সেইভাবে লাভ হয় না। অনেক সময় ঢাকার ক্রেতারা বাকিতে চামড়া নিয়ে এই বছরের টাকা পরের বছরে দিয়ে থাকেন। এখন যে দামে বিক্রি হচ্ছে তাতে আড়তদাররা খুশি বলে জানান তিনি। এবার চট্টগ্রাম মহানগরী ও ১৫ উপজেলায় ৪লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করেছেন আড়তদাররা।

আড়তদার সমিতি নেতারা জানিয়েছেন, চার লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস পশুর চামড়ার মধ্যে গরুর চামড়া তিন লাখ ১৫ হাজার ৩৫১ পিস। মহিষের চামড়া ১০ হাজার ৫০০ পিস। ছাগলের চামড়া ৫২ হাজার ৫০০ পিস।

গত ৭ জুন শনিবার কোরবানি ঈদের দিন এবং এর পরের দিন পর্যন্ত থেকে পরের দিন পর্যন্ত চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা তাদের আতুরার ডিপো, মুরাদপুরবিবিরহাট, হামজারবাগ আড়তগুলোতে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩০০ পিস গরুর চামড়া এবং ১০ হাজার ৫০০ পিস মহিষের চামড়া এবং ৫২ হাজার ৫০০ পিস ছাগলের চামড়া সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫১পিস।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঅনিশ্চয়তা কেটে এসেছে স্বস্তির বার্তা : ফখরুল
পরবর্তী নিবন্ধপ্রস্তুতি শেষ হলে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে