সতেরোই এপ্রিল মুজিবনগর দিবসে প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে এই ঐতিহাসিক দিনটির স্মরণ–উৎসবের সূচনা করে থাকেন, এবারো করলেন। কিন্তু, মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের প্রতি বছরের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের দায়িত্বটা বর্তাচ্ছে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতৃবর্গের ওপর, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরের মত এবারও মুজিবনগরে অনুপস্থিত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ আমাদের ইতিহাসের মহাগুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। মুজিবনগর সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামও অনেক বছর ধরে আওয়ামী লীগের মূল নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়েছেন। অথচ, তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দিশারী এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল ঘোষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল মুসাবিদাকারী। আর কতদিন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস খন্ডিতকরণ চালু থাকবে জানি না।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, ১৯৭১ সালের ২৫ ও ২৬ মার্চের রাতের ঘটনাবলীর ধারাবাহিকতায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যেভাবে শুরু হয়েছিল তার সাথেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে মুজিবনগর দিবসের প্রতি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের এহেন রহস্যজনক ভালবাসার ঘাটতি। অথচ, আমার বিবেচনায় ঐ পর্যায়ে জনাব তাজউদ্দিন এবং ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন তার জন্যে জাতি চিরদিন মহান আল্লাহতাআলাহকে শোকরিয়া জানানো উচিত, এবং তাঁদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকা উচিত। আমার এই বিবেচনার ব্যাখ্যা নিম্নরূপ: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় যখন ইয়াহিয়া খান গোপনে ঢাকা ত্যাগ করলেন তখনই সারা দেশের মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনী বাঙালি জাতির ওপর সশস্ত্র আঘাত হানতে যাচ্ছে। পূর্ব–পরিকল্পনা মোতাবেক বঙ্গবন্ধু ও তাজউদ্দিন আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করার কথা ছিল। সেনাবাহিনী ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে রওনা হবার খবর পেয়েই তাজউদ্দিন বঙ্গবন্ধুর বাসায় গেলেন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যেতে, পুরানো ঢাকার একটি বাসাও ঠিক করে রাখা হয়েছিল আত্মগোপনের জন্যে। কিন্তু, ইতিহাসের ঐ যুগসন্ধিক্ষণে শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তে বঙ্গবন্ধু কোথাও যেতে রাজী হলেন না। তাজউদ্দিনের তাবৎ কাকুতি–মিনতি বিফলে গেলো। বঙ্গবন্ধুর এক কথা, ‘তোমরা যা করার কর, আমি কোথাও যাবনা’। তাজউদ্দিন একটি স্বাধীনতার ঘোষণাও লিখে নিয়ে গিয়েছিলেন, এবং টেপরেকর্ডারও নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, বঙ্গবন্ধু টেপে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানালেন। বঙ্গবন্ধুর মন্তব্য,‘এটা আমার বিরুদ্ধে দলিল হয়ে থাকবে। এর জন্যে পাকিস্তানিরা আমাকে দেশদ্রোহের জন্যে বিচার করতে পারবে’। তাজউদ্দিনের পীড়াপীড়ির জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন,‘বাড়ি গিয়ে নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকো, পরশুদিন হরতাল ডেকেছি’। (সূত্র: শারমিন আহমদ, তাজউদ্দিন আহমদ: নেতা ও পিতা, ঐতিহ্য, এপ্রিল ২০১৪)
তাজউদ্দিনকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিলেও স্বাধীনতা ঘোষণার বিকল্প ব্যবস্থা ছিল বঙ্গবন্ধুর, এটা এখন প্রমাণিত। তিনি স্বেচ্ছায় পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার সিদ্ধান্ত যেমনি নিয়েছিলেন, তেমনি আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের অগোচরে ওয়ারলেস ও অন্যান্য মিডিয়ার মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটিও জাতিকে জানানোর ব্যবস্থাটি বাস্তবায়ন করেছিলেন। শারমিন আহমদের বইয়ে ওয়ারলেসের চীফ ইঞ্জিনিয়ার নুরুল হকের একটি টেলিফোন কল রিসিভ করার প্রসঙ্গটি বর্ণিত হয়েছে, যে কলটি ২৫ মার্চ মধ্যরাতের অব্যবহিত পর রিসিভ করেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী গোলাম মোরশেদ। জনাব নুরুল হক গোলাম মোরশেদের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর কাছে জানতে চেয়েছিলেন,‘ম্যাসেজটি পাঠানো হয়ে গেছে। এখন মেশিনটি কী করব?’ তখন গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। হয়তো তাই বঙ্গবন্ধ ু টেলিফোন কল রিসিভ না করেই গোলাম মোরশেদের মাধ্যমে জবাব দিয়েছিলেন,‘মেশিনটি ভেঙে ফেলে পালিয়ে যেতে বল্’। হাজী গোলাম মোরশেদের এই কাহিনীর সমর্থন মিলছে ইঞ্জিনিয়ার নুরুল হককে ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঐ ওয়ারলেস ম্যাসেজ পাঠানোর অপরাধে বাসা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করার ঘটনায়। এই কাহিনীর একমাত্র সাক্ষী গোলাম মোরশেদ আজো বেঁচে আছেন। ২৫ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে শারমিন আহমদের বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি সংক্ষিপ্ত ভাষণে ঐ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছিলেন, ঐ অনুষ্ঠানে আমিও আলোচক ছিলাম। (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতে ইপিআর এর ওয়ারলেসের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রেরণ করেছিলেন)। এই কাহিনীগুলো ২৬ মার্চ রাতের বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার অকাট্য প্রমাণ, যা ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রচারিত ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে’ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে । এ রকম একটা ম্যাসেজই চট্টগ্রামের ওয়ারলেস অফিস থেকে হয়তো ডাঃ নুরুন্নাহার জহুরকে ফোনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল, যেটা সাইক্লোস্টাইল করে ২৬ মার্চ ভোর থেকে চট্টগ্রামে প্রচার করা হয়েছিল! ২৬ মার্চ সকালে একটি ঘোড়ার গাড়ীতে করে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারকারীদের হাত থেকে আমিও ঐ লিফলেটটা পেয়েছিলাম চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায়।
বঙ্গবন্ধুকে টেপে স্বাধীনতা ঘোষণায় রাজী করাতে না পেরে বিক্ষুব্ধ চিত্তে নিজ ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন তাজউদ্দিন। এরপর কীভাবে ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম জনাব তাজউদ্দিনকে বাসা থেকে নিজের গাড়িতে তুলে নিয়ে লালমাটিয়ার এক বাড়িতে গিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন এবং ২৭ মার্চ কারফিউ প্রত্যাহারের পর জীবন বাজী রেখে তিন দিন তিন রাতের কঠিন ও বিপদসঙ্কুল যাত্রা পার হয়ে ৩০ মার্চ কুষ্টিয়ার জীবননগর সীমান্তের টুঙ্গি নামক জায়গার একটি কালভার্টের ওপর পৌঁছে জনাব তওফিক–ই– ইলাহী চৌধুরী এবং জনাব মাহবুবউদ্দিন আহমদকে বিএসএফ এর কর্মকর্তাদের কাছে আলোচনার জন্যে পাঠিয়েছিলেন তার মনোমুগ্ধকর বর্ণনা তাজউদ্দিন–কন্যা শারমিন আহমদের বইটির ১০৬–১১০ পৃষ্ঠায় উল্লিখিত আছে। জনাব তাজউদ্দিন ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর এক সাক্ষাৎকারে জাতিকে জানিয়েছিলেন যে, টু্ঙ্িগর ঐ কালভার্টের ওপর অপেক্ষা করার সময়েই তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে একটা স্বাধীন সরকার প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করবেন এবং তজ্জন্যে ভারতের সাহায্য কামনা করবেন। সফল আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই জনাব তাজউদ্দিন এবং ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামকে বিএসএফ এর একটি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এবং খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন বিএসএফ এর পশ্চিমবঙ্গের আঞ্চলিক প্রধান গোলক মজুমদার। তাঁর মাধ্যমে বিএসএফ মহাপরিচালক সুন্দরজি খবর পেয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। মিসেস গান্ধী জনাব তাজউদ্দিন এবং ব্যারিস্টার আমিরুলকে সাক্ষাৎ দানে সম্মত হওয়াতে তাঁদেরকে নয়াদিল্লী নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এয়ারপোর্টে তাঁদের জামাকাপড়ের মলিনদশা দেখে সুন্দরজি নিজের স্যুটকেশ থেকে কাপড় দিয়ে তাঁদেরকে কাপড় পাল্টানোর সুযোগ করে দেন। পরে তাঁদেরকে আরো কিছু জামাকাপড় কিনে দেওয়া হয়েছিল। দিল্লী পৌঁছানোর পর ৩ এপ্রিল তারিখে শ্রীমতি গান্ধীর সাথে তাঁদের সাক্ষাৎ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দিল্লীতে এরই মাঝে গিয়ে পেঁৗঁছান বাংলাদেশের দুজন খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ জনাব রেহমান সোবহান ও ডঃ আনিসুর রহমান। তাঁরাও আলোচনায় শরীক হতে শুরু করেন। একাধিক আলোচনা বৈঠকের পর ১০ এপ্রিল জনাব তাজউদ্দিন এক বেতার ভাষণে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘোষণা প্রদান করেন, যাতে মার্চের অসহযোগ আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু কর্তৃক গঠিত হাই কমান্ডের সদস্যদেরকে মন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতা ঘোষণার ঐ ভাষণটির মুসাবিদা করেছিলেন জনাব তাজউদ্দিন, ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম এবং প্রফেসর রেহমান সোবহান। ভাষণ প্রদানের পর জনাব তাজউদ্দিন এবং ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম কোলকাতা ফেরত এসে অন্যান্য নেতাদেরকে খুঁজতে শুরু করেন। প্রথমে তাঁদের দেখা হয় জনাব মনসুর আলী ও জনাব কামরুজ্জামানের সাথে; তাঁরা দুজনেই সানন্দে সম্মতি প্রদান করেন।্ পরে খবর পাওয়া যায় যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম ময়মনসিংহ সীমান্তে আছেন। তাঁর কাছে ছুটে যান তাজউদ্দিন, তিনিও সম্মতি দেন। পরে আগরতলায় খোন্দকার মোশতাকের আপত্তির মুখে পড়েন তাজউদ্দিন; পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে দেওয়ার শর্তে তাঁর সাথে রফা হয়। আরো তীব্র বাধা এসেছিল শেখ মনির নেতৃত্বে যুব ও ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে, যাঁরা তাঁদের নেতৃত্বে বিপ্লবী কাউন্সিল করার ম্যান্ডেট বঙ্গবন্ধু নিজেই তাঁদেরকে দিয়েছিলেন বলে দাবি তুলে ঘোষিত সরকারের শপথ অনুষ্ঠানকে প্রায় ভন্ডুলই করে দিয়েছিলেন। তীব্র বাক–বিতন্ডা ও তর্ক–বিতর্কের পর তাঁদেরকে নিরস্ত করা গিয়েছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতেই রচিত হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিলের মুজিবনগর দিবসের ইতিহাস। এটা খুবই বেদনাদায়ক যে, কোন অজানা কারণে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায় একবারও মুজিবনগরে যাননি। কিন্তু, এখনতো মুজিবনগর দিবসের স্মৃতি রক্ষার্থে মুজিবনগরে দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধসমূহ গড়ে তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামেই পরিচালিত হয়েছিল, যদিও তিনি ২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতেই পাকিস্তানীদের হাতে গ্রেফতার হয়ে পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময়টায় পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী ছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তাঁর এই একক মহানায়কোচিত ভূমিকার জন্যই তাঁকে ‘জাতির পিতা’র আসনে অভিষিক্ত করা হয়েছে। কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার মূল কান্ডারি তাজউদ্দিনকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে কার্পণ্য করলে সেটা জাতি হিসেবে আমাদেরকে অপরাধী করে ফেলা হয় না? ছয়দফা ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসনের সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতার সংগ্রামে উত্তরণের ১৯৬৬–১৯৭১ পর্বের আওয়ামী লীগে বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দিনের যুগল–নেতৃত্ব চীনের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবে মাও–সে–তুঙ এবং চৌ এন লাইয়ের যে ঐতিহাসিক যুগল–নেতৃত্বের ভূমিকা তারই যেন বাংলাদেশী সংস্করণ। বঙ্গবন্ধুর অতুলনীয় ক্যারিশমা, জনগণের নাড়ির স্পন্দন অনুভবের ক্ষমতা ও জনসম্পৃক্ততা এবং তাজউদ্দিনের মেধাদীপ্ত সাংগঠনিক দক্ষতার সংমিশ্রণ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে অপরাজেয় গতি এনে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর পাশে তাজউদ্দিনের উপস্থিতি পাকিস্তানী শাসক মহলের কাছে ভীতিকর মনে হতো সারাক্ষণ। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরত আসার পরদিনই শেখ মনি এবং খোন্দকার মোশতাক গং এই পারষ্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার সম্পর্কে ফাটল ধরাতে সফল হয়েছিল। সেজন্যই ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু–তাজউদ্দিন সম্পর্কে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করেছিল, যা তাঁদের মৃত্যু পর্যন্ত আর কাটিয়ে ওঠা যায়নি। অথচ, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ৩ নভেম্বরের ট্র্যাজেডি প্রমাণ করে দিয়েছে যে তাজউদ্দিন কখনোই বঙ্গবন্ধুর সাথে সামান্যতম বিশ্বাসভঙ্গও করেননি। মুক্তিযুদ্ধের এই মহান কান্ডারিকে তাঁর যথাযোগ্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই দুঃখজনক অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন, এটাই আমার একান্ত প্রার্থনা।
লেখক : সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়