নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন বলেছেন, তার বন্ধু ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছেন, তবে অচলাবস্থা নিরসনে তার সামনে এখনো দীর্ঘ পথ বাকি। সম্প্রতি শান্তিনিকেতনে নিজের পৈতৃক বাড়িতে ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসকে কেমন দেখছেন–এমন প্রশ্নের জবাবে অমর্ত্য বলেন, ইউনূস আমার পুরনো বন্ধু। আমি জানি, তিনি অত্যন্ত দক্ষ এবং বহু ক্ষেত্রে অনন্য এক ব্যক্তি। তিনি বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের প্রতি শক্তিশালী অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। খবর বাংলানিউজের।
তিনি বলেন, যদি হঠাৎ করে কেউ কোনো দেশের প্রধান হয়ে যান, যেমন ইউনূস হয়েছেন, তখন তাকে বিভিন্ন গোষ্ঠীর কথা ভাবতে হয়। সেখানে ইসলামী দল রয়েছে, এখন হিন্দু গোষ্ঠীগুলোরও ভূমিকা রয়েছে। ইউনূসের দক্ষতার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলাদেশের উচিত একসঙ্গে কাজ করার ঐতিহ্যকে কাজে লাগানো, কোনো গোষ্ঠীকে বাদ দেওয়ার পথে না হাঁটা। সেজন্য আরও বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। আমি আশা করি, স্বাধীনতা ও বহুত্ববাদে বাঙালির অঙ্গীকার অটুট থাকবে। আর ভবিষ্যৎ নির্বাচনগুলো আগের তুলনায় আরও স্বচ্ছ ও অবাধ হবে, যেমনটা অনেকেই দাবি করছেন। পরিবর্তনের সুযোগ এখনও আছে। আমি বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে আশাহীন নই।
অমর্ত্য সেন শৈশবের বড় একটা সময় ঢাকায় কাটান। তার আনুষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয়েছিল ঢাকার সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে, কারণ আমার মধ্যে শক্তিশালী বাঙালি পরিচয়ের অনুভূতি রয়েছে। বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, সেগুলো কীভাবে সামাল দেবে, তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের কথাও জানান এই নোবেল বিজয়ী।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংবাদপত্র এখনও তুলনামূলকভাবে স্বাধীন রয়েছে। অনেক পত্রিকা সরকারবিরোধী কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরও টিকে আছে এবং বিকাশ লাভ করছে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা সংযম দেখিয়েছে এবং অন্যান্য অনেক দেশের মতো সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেনি।