চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) নম্বর ক্লোন করে নানা জনের কাছে টাকা দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগরীর কোতোয়ালী থানায় জিডি (জেনারেল ডায়েরি) করা হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের স্ট্যাফ অফিসার প্লাবন কুমার বিশ্বাস আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের ফোন নম্বর ক্লোন করে বিভিন্নজনকে ফোন করে টাকা চাওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে ক্লোনকৃত নম্বর থেকে ফোন করে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মচারীর কাছেও টাকা চাওয়া হয়। এরপরই খটকা লাগে। পরবর্তীতে ক্লোন করা নম্বরে ফোন করা হলে কেউ আর ফোন ধরেননি। এরপর যাচাই করলে ফোন ক্লোন করার বিষয়টি পরিষ্কার হয়। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের সরকারি নম্বরটি ক্লোন করে +৩৮০১৭১৩১০৪৩৩২ নম্বর থেকে ফোন করে টাকা চাওয়া হয় মর্মে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তাই উক্ত নম্বর থেকে ফোন করা হলে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকার জন্য বলেছেন জেলা প্রশাসক। এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানায় জিডি হয়েছে উল্লেখ করে প্লাবন কুমার বিশ্বাস বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি পুলিশ সুপারের নম্বর ক্লোন করেও টাকা দাবি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ বলেন, একই সাথে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নম্বর ক্লোন করা নিয়ে কেউ কোনও দূরভিসন্ধি বা ষড়যন্ত্র করছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি জানিয়েছে, চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই এর কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা চেয়ে প্রতারণার চেষ্টা করে ওই প্রতারক চক্র। বিষয়টি নিয়ে গত ১৯ আগস্ট রাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে, যার নং ৯৪৪। বিষয়টি সম্পর্কে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, গত ১৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার দিকে সীতাকুণ্ড থানার ডিউটি অফিসারের সরকারি মোবাইল নম্বরে চট্টগ্রাম এসপির নাম বলে ফোন কল আসে। থানার ডিউটি অফিসার কলটি রিসিভ করেন। তখন বিপরীত পাশ হতে জানতে চাওয়া হয় থানায় এএসআই কত জন ডিউটিতে আছেন এবং কোথায় আছেন। ডিউটি অফিসার বলেন, ৪ জন রয়েছে এবং কোথায় আছে জানার জন্য ফোন দিয়ে দেখতে হবে। পরবর্তীতে ডিউটি অফিসারের নিকট থেকে একজন এএসআইয়ের মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়। তখন ডিউটি অফিসার ডিউটিরতদের ইনচার্জ এসআই (নিঃ) মোহাম্মদ সোহেল আহমদের মোবাইল নম্বর মোখিকভাবে প্রদান করেন। পরবর্তীতে ওই নম্বর থেকে এসআই সোহেলকে ফোন করে বলা হয়, আমি তোমার এসপি বলছি, আমি একটি বিপদে আছি। জরুরি ভিত্তিতে দুই লক্ষ টাকা পাঠাও। তখন এসআই সোহেল আহমদ বলেন, আমি এসপি স্যারের কণ্ঠ চিনি, আপনি এসপি স্যার না, টাকা লাগলে বলেন কোথায় নিয়ে আসবো। তখন ওই ব্যক্তি অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ফোন কেটে দেন। বিষয়টি ডিউটি অফিসার ও এস আই সোহেল তাৎক্ষণিক আমাকে জানান। বিষয়টি সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্ল্যাহকে ফোন দিলে তিনি এরকম ফোন দেননি বলে জানান। তাই শনিবার রাতে সীতাকুণ্ড থানার জিডি করা হয়েছে।
ওসি প্রতারণা বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার এবং বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।