ডিভাইস নয়, সন্তানের হাতে তুলে দিতে হবে বই

দুটি গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে কামরুন মালেক

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল ডিস্ট্রিক্ট ৩১৫বি৪ এর সদ্য প্রাক্তন গভর্নর লায়ন কামরুন মালেক বলেছেন, তরুণ প্রজন্মকে সুপথে আনতে তাদের হাতে গুণীজনদের জীবনাদর্শ তুলে দিতে হবে। তাদের সামনে দাঁড় করাতে হবে আদর্শবান মানুষগুলোকে। পিতা-মাতাকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। নানা ধরনের ডিভাইস আসক্তি থেকে প্রজন্মকে বাঁচাতে তাদের বইমুখী করতে হবে, করতে হবে জীবনমুখী। প্রজন্মকে রক্ষা করতে না পারলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে আমাদের সন্তানদের মানুষ করার সময় এসেছে। তাদের মানবিক করার সময় এসেছে। বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন হওয়াসহ নানা সামাজিক সংকট তুলে ধরে তিনি বলেন, দিনে দিনে আমাদের চারপাশ অপরিচিত হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে শুধু জীবনধারণই নয়, আমাদের সবকিছুই গভীর সংকটে পড়ে যাবে।
তিনি গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত ‘বরিশাল ডুকুমেন্টস-১, ট্রু টেলস অব ট্রিম্ফস’ গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। গ্রন্থের রচয়িতা বিশিষ্ট লেখিকা সানজিদা খালেদের সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপিকা নুর বানু চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাবিদ, সেন্ট মেরিস স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা পূরবী সরকার, ব্যাংকার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এবং দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর। লেখিকা রুসেলি রহমান চৌধুরীর গ্রন্থনা ও সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘বরিশালের প্রয়াত গুণীজন’ গ্রন্থের অনুবাদ করেছেন লেখিকা সানজিদা খালেদ। বরিশালের বিখ্যাত সব গুণীজনদের জীবনী এতে বর্ণিত হয়েছে। ইংরেজীতে অনুদিত নান্দনিক বইটির প্রকাশনা উৎসবে কামরুন মালেক বলেন, লেখিকা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অনুবাদ করেছেন। তিনি বরিশালের গুণীজনদের উপস্থাপন করলেও মূলত তাঁরা পুরো দেশের মানুষের জন্যই কাজ করেছেন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, বেগম সুফিয়া কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালসহ বরিশালের বিখ্যাত সব রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকদের জীবনালেখ্য বইটিতে বর্ণিত হয়েছে। মিসেস কামরুন মালেক বলেন, এসব গুণীজনের জীবনাদর্শ নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করতে পারলে আমাদের সন্তানেরা উপকৃত হবে। তিনি ভবিষ্যতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের গুণীজনদের নিয়েও এই ধরনের বই লেখার জন্য তিনি লেখিকা সানজিদা খালেদের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, বাংলার আদর্শবান মানুষগুলোকেই এই প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে হবে। ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া করা আমাদের সন্তানদের হাতে যত বেশি দেশীয় গুণীজনদের তুলে দেয়া সম্ভব হবে সমাজ তত বেশি উপকৃত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে শিক্ষিকা পূরবী সরকার বলেন, আধুনিকতার নামে আমাদের সমাজ গিলে খাচ্ছে বিভিন্ন ডিভাইস। এখান থেকে আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনতে সানজিদা খালেদের মতো লেখিকারা বড় ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি সানজিদা খালেদের মতো লেখিকাদের আরো বেশি করে আদর্শবান মানুষের জীবনালেখ্য লেখার আহ্বান জানান। পাথরঘাটার সেন্ট জনস এবং সানি টিউটরিয়াল নামের বিদ্যাপীঠের কর্ণধার শিক্ষিকা পূরবী সরকার বলেন, কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের হাতে এই ধরনের বই যত বেশি তুলে দেয়া যাবে সমাজ ততই উপকৃত হবে। তিনি শুধু স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাই নয়, তাদের মা বাবাদের ডিভাইস আসক্তিও বড় ধরনের সংকট তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে এক রাতে তিন মোটরসাইকেল চুরি
পরবর্তী নিবন্ধতিশার ‘ফ্ল্যাটমেট’ জোভান