ডিবি হেফাজত থেকে পরিবারের কাছে ৬ ‘সমন্বয়ক’

ছাড়া পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানালেন ৪জন

| শুক্রবার , ২ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম। খবর বিডিনিউজের।

তিনি বলেন, দুপুরে ডিবির নিজস্ব গাড়ি দিয়ে সবাইকে নিজ নিজ বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তারা ডিবি হেফাজতে ৩২ ঘণ্টা অনশন করেছিল। তারা এখন খুবই ক্লান্ত। তাই আপাতত গণমাধ্যমে আপাতত কথা বলছে না। ছাড়া পাওয়া ৬ সমন্বয়ক হলেননাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম। ছাড়া পাওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের ছয়জনকে একসঙ্গে ছাড়া হয়নি। আলাদাভাবে একজন করে পুলিশের গাড়িতে করে আমাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের ছাড়ার মাঝে সময়ের ব্যবধান ছিল ১০ মিনিট। আমরা শিগগির আমাদের অবস্থান সম্পর্কে জানাব।গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নাহিদ ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে আনা হয়। কিন্তু তাদের বিষয়ে কয়েক ঘণ্টা কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি সরকারের পক্ষ থেকে।

ওইদিন সন্ধ্যার পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি। এ নিয়ে আলোচনাসমালোচনার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে হেফাজতে নেওয়া হয়। রোববার নেওয়া হয় নুসরাত তাবাসসুমকে।

ছাড়া পেয়ে যা বললেন ৪ জন : এদিকে বাংলানিউজ জানায়, ডিবি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে ৪জন সমন্বয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য দিয়েছেন।

ফেসবুকে পোস্টে অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন– ‘এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই মুক্ত নই। এই গণগ্রেপ্তার গণঘৃণার নামান্তর। আমাদের মুক্তি তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটিও মুক্তি পাবেন।’

আন্দোলন নিয়ে পোস্ট দেন সারজিস আলমও। তিনি লেখেন– ‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। আপনারা কথা রাখেননি।’ তিনি লিখেন, ‘৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কীভাবে নিবৃত করবেন?’

আসিফ মাহমুদ লিখেছেন– ‘বেআইনিভাবে আটক রাখা থেকে মুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ৩২ ঘণ্টা আমরণ অনশনে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, নাহিদ ইসলাম ও আবু বাকের মজুমদার। এ সময় তারা কোনো প্রকার খাবার, পানি, ও চিকিৎসা নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। শিক্ষকশিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সমন্বয়কদের অনশনের মুখে আজ দুপুর ১টার দিকে ৬ সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

নুসরাত তাবাসসুমের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তার ফুফাতো বোন মেহের আফরোজ। নুসরাতের ফেসবুক থেকে তিনি লিখেছেন– ‘নুসরাত তাবাসসুমকে ডিবি অফিস থেকে ফেরত পেয়েছি আমরা। ৩২ ঘণ্টা অনশনের ফলে শারীরিক মানসিকভাবে নুসরাত দুর্বল। সকল প্রতিবাদী কণ্ঠকে আপনাদের দোয়ায় রাখবেন।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে আজও ১৬ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল
পরবর্তী নিবন্ধটানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বান্দরবানের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত