ডিজেলের দাম বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যা

| শনিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২১ at ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ

প্রতি লিটার ডিজেলে গত অক্টোবরে ১৩ টাকা লোকসান দেওয়ার পর নভেম্বরে এসে ১৫ টাকা করে দাম বাড়িয়েছে সরকার। গতকাল শুক্রবার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় তেলের মূল্য বাড়ানো নিয়ে ব্যাখ্যায় এ তথ্য দিয়েছে। তবে লোকসানের চেয়ে বেশি পরিমাণে দাম বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করা হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
গত বুধবার মধ্যরাত থেকে ২৩ শতাংশ বাড়িয়ে দেশে ব্যবহৃত জ্বালানি তেলের মধ্যে অন্যতম ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর ঘটনাকে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে দাবি করছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে ওই দিন দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পূর্ণনির্ধারণ করা হয়।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ব্যাখায় বলা হয়, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাধিক ব্যবহৃত ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসি লোকসানের সম্মুখীন হয়। চলতি বছরের জুনে ডিজেলে লিটারপ্রতি ২ টাকা ৯৭ পয়সা, জুলাইয়ে ৩ টাকা ৭০ পয়সা, অগাস্টে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, সেপ্টেম্বরে ৫ টাকা ৬২ পয়সা এবং অক্টোবরে ১৩ টাকা ০১ পয়সা লোকসান দিয়েছে বিপিসি।
এ হিসাবে গত সাড়ে পাঁচ মাসে ডিজেলের ক্ষেত্রে বিপিসির মোট লোকসানের পরিমাণ প্রায় ১১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। যা সরকারি ভূর্তকি দিয়ে সমন্বয় করতে হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।
তাছাড়া জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রায় ৩৩ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি)। এ অবস্থায় সংস্থাটি লোকসানে চলে গেলে এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। যা জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।
ব্যাখ্যায় বলা হয়, সার্বিক প্রেক্ষাপটে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে সরকার ৪ নভেম্বর থেকে দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য পুর্ননির্ধারণ করেছে। যদিও আশেপাশের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য এখনও কম।
ব্যাখায় সর্বশেষ দাম বাড়ানো ও কমানোর তথ্যও তুলে ধরা হয়। বলা হয়, সরকার ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে দেশে ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৬৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। পরে ২০১৬ সালের এপ্রিলে তা ৩ টাকা কমিয়ে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে।
বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ডিজেল-কেরোসিনের মূল্য অপরিবর্তিত ছিল এবং ইতোমধ্যে বিপিসি ১০ হাজার কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে। দাম বাড়ানোর দিন ৪ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় বলা হয়, বর্তমান ক্রয়মূল্য বিবেচনা করে বিপিসি ডিজেলে লিটার প্রতি ১৩.০১ এবং ফার্নেস অয়েলে লিটার প্রতি ৬.২১ টাকা কমে বিক্রয় করায় প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা লোকসান দিচ্ছে। অক্টোবরে বিভিন্ন গ্রেডের পেট্রোলিয়াম পণ্যে মোট ৭২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার শুধু ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য প্রতি লিটার ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা পূর্ণনির্ধারণ করেছে বলে ওই দিন উল্লেখ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদাম বাড়ল ডিজেলের ভাড়া বাড়ল সিএনজির!
পরবর্তী নিবন্ধধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরে স্থবিরতা, কন্টেনার জটের শঙ্কা