ডিজেলেও চলছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বেড়েছে গ্যাস সরবরাহ

| রবিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২২ at ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডিজেলভিত্তিক কিছু কেন্দ্র আবার চালুর পাশাপাশি গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোয় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে জানিয়ে সরকারের তরফে বলা হচ্ছে, লোড শেডিং কমে দেশ ‘ভালোর দিকে’ যাচ্ছে। জুলাই মাসে প্রতিদিন যে পরিমাণ লোড শেডিং হয়েছে, গেল সপ্তাহে তা কয়েকগুণ কমেছে বলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখন মোটামুটি ভালো অবস্থা। আরও ভালো অবস্থার দিকে যাচ্ছি আমরা।’ আগামী মাসের শেষ থেকে লোড শেডিং আর থাকবে না বলে এর আগেই আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
সমপ্রতি বিদ্যুৎ ও তেলের খরচ কমানোসহ সরকারের একগুচ্ছ সিদ্ধান্তে অনেক বছর ধরে হারিয়ে যাওয়া লোড শেডিং আবার ফিরতে শুরু করে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক সংকট এড়াতে সাশ্রয়ী হওয়ার অংশ হিসেবেই এমন পদক্ষেপ নেয় সরকার। সংকটের মধ্যে ডলার ধরে রাখতে উচ্চ মূল্যের জ্বালানি আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমিয়ে ফেলা হয়। জুলাইয়ের শুরুতে স্পট মার্কেটের এলএনজি আমদানি বন্ধ করার পর গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায় হারিয়ে যাওয়া লোড শেডিং ফিরতে শুরু করে। পরে প্রায় ১০০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ডিজেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের পর সূচি করে দেশব্যাপী লোড শেডিং শুরু হয়। ওই সময়টায় পিডিবির হিসাবে, ১৯ জুলাই ১৩ হাজার ৪৮৫ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছিল ১১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট। ওইদিন লোড শেডিং ছিল ২ হাজার ৩৮৫ মেগাওয়াট। কিন্তু ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে ফিরে আসায় এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৫০০ মেগাওয়াটের আশেপাশে লোড শেডিং হচ্ছে। পিডিবির ওয়েবসাইটে সর্বশেষ মঙ্গলবারের তথ্য দেওয়া হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওই দিন ১৩ হাজার ৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছিল, আর লোড শেডিং হয়েছিল ৫১১ মেগাওয়াট। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় চাহিদা আরও কমেছে। শুক্রবার ২০০ মেগাওয়াটের মত লোড শেডিং ছিল বলে জানান পিডিবির এক কর্মকর্তা।
আগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য দিনে ৯৫০ মিলিয়ন ঘনফুটের আশেপাশে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও গত দুই সপ্তাহ ধরে তা বাড়তে দেখা গেছে। কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করা হয়। পাঁচটি জাহাজে চক্রাকারে এলএনজি আসে বাংলাদেশে। গত কিছুদিন জাহাজগুলো ঘনঘন আসায় দিনে গড়ে ১০০ মিলিয়ন ঘনফুটের মত এলএনজি সরবরাহ বেড়েছে বলে পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরেই ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালানো হচ্ছে। যখন যেমন প্রয়োজন হচ্ছে, সে অনুযায়ী ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু রাখা হচ্ছে।’ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘ডিজেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো চালু হয়েছে। লস হলেও আমরা চালু রাখছি।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধকোটি টাকার ইলিশ লুট
পরবর্তী নিবন্ধদেশে ফিরেছেন ৯ নাবিক, আরো ৬ জনকে আনার চেষ্টা