সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেনার ডিপো অগ্নিকাণ্ডে যে ৪১ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে এখনো ১৭ জনের পরিচয় জানা যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় বের করা হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুথ স্থাপন করে গত দুইদিনে ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, প্রতিটি পরিবারের দুইজনের কাছ থেকে নমুনা হিসেবে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত একমাস সময় লাগতে পারে। খবর বিবিসি বাংলার।
প্রতিটি প্রাণীর শরীরে ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড) হচ্ছে একটি নিউক্লিক এসিড, যেখানে ডিএনএ জিনোম থাকে। একে জীবনের নীলনকশা বলেও বর্ণনা করা হয়। কারণ এর ভেতরে জীবদেহের গঠন ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের জিনগত সব তথ্য থাকে। প্রতিটি জীবের ডিএনএর ধরন আলাদা হয়ে থাকে। ফলে কারও ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা গেলে তার জিনগত তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিটি মানুষের ডিএনএ আলাদা হলেও তার বাবা-মা, সন্তান, বা ভাই-বোনের সঙ্গে কিছুটা মিল থাকে। বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে ডিএনএ জিনোমের এই মিল শনাক্ত করে তাদের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি রুমানা আক্তার বলছেন, আগুনে যে মৃতদেহগুলো অনেক বেশি পুড়ে গেছে, তাদের হাড়, দাঁত বা কংকাল নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা হয়। আবার কারও শরীরে টিস্যু পাওয়া গেলে টিস্যুও সংগ্রহ করা হয়। সেই সঙ্গে স্বজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে যারা দাবি করছেন, তাদের শরীর থেকে নমুনা হিসেবে রক্ত নেয়া হয়ে থাকে। স্বজনদের নমুনা নেয়ার ক্ষেত্রে নিহতদের বাবা-মা বা সন্তানদের প্রাধান্য দেয়া হয়। কিন্তু এরকম পাওয়া না গেলে ভাই-বোনেরও নমুনা নেয়া হয়ে থাকে। এগুলো সিআইডি ল্যাবে আসার পরই পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।
রুমানা আক্তার বলেন, শুধুমাত্র রক্ত বা মুখের লালা পরীক্ষার মাধ্যমে ডিএনএ পরিচয় বের করতে আট থেকে ১০ দিন লাগে। কিন্তু হাড় বা দাঁত থেকে কারও ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করতে অন্ততপক্ষে চার সপ্তাহ সময় লাগে। সেখানে মিল না পাওয়া গেলে আবার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করতে হতে পারে। তাতে আরও বেশি সময় লাগতে পারে। এজন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ, কাগজপত্র তৈরি করা, পরীক্ষার নানারকম ধাপ পার হয়ে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এই সময় দরকার হয় বলে তিনি জানান।












