সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ১৪ জনের মরদেহের পরিচয় ডিএনএর মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ। তিনি বলেন, বিএম ডিপোর নিখোঁজদের শনাক্ত করার জন্য আমরা ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছিলাম। এর মধ্যে ২৪ জন নিখোঁজের স্বজন আমাদের কাছে নমুনা দিয়েছেন। ১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছি। বাকিদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনায় পরিচয় শনাক্ত না হওয়া মরদেহগুলো মেডিকেলের মর্গে রাখা ছিল। এর মধ্যে কয়েকজনের পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের ডিএন ম্যাচিং হয়েছে এমন আটজনের পরিবারকে তাদের স্বজনদের মরদেহ নেওয়ার জন্য খবর দেওয়া হয়েছে।
যাদের স্বজনদের মরদেহ নিয়ে যেতে বলা হয়েছে তারা হলেন- বিএম ডিপোর গাড়ি চালক মোহাম্মদ আক্তার হোসেন, মনির হোসেন, মোস্তাক পরিবহনের গাড়ি চালক আবুল হাশেম, শারমিন গ্রুপের গাড়ি চালক বাবুল মিয়া, কার্ভাডভ্যানের হেলপার মোহাম্মদ সাকিব, বিএম ডিপোর ইলেকট্রিশিয়ান মো. রাসেল, গাড়ি চালক মোহাম্মদ শাহজাহান ও বিএব ডিপোর আইসিডি সুপারভাইজার আবদুস সুবহান (রহমান)।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ৫১ জনের মধ্যে আগে ২৯ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছিল, এই ১৪ জনসহ ৪৩ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে।
এর আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে বুথে বসিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবের টিম মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে গত ৬ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছিল।
গত ৫ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ভয়ঙ্কর এক বিস্ফোরণ ঘটে সেখানে। এতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ডিপোটির বিভিন্ন জায়গায়।
এ ঘটনায় প্রথম দুই দিনে দমকলকর্মীসহ ৪১ জন মারা যান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কয়েকজনের মৃত্যু হয় এবং ডিপোতে কয়েকটি দেহাবশেষ পাওয়া যায়। ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৫১ জন মারা গেছেন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ।