সন্ত্রাস বিরোধী ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের বেশ কিছু ধারায় নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের রিমান্ড আবেদন বাতিল (নাকচ) করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে মহানগর হাকিম শফি উদ্দিনের আদালত এ রিমান্ড বাতিলের আদেশ দেন। এর আগে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে পেতে ডা. শাহাদাতের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
ডা. শাহাদাতের আইনজীবী কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ আজাদীকে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন। কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদন এবং একই সাথে আমাদের করা জামিন আবেদনের উপর শুনানি হয়। আদালত আমাদের আবেদন আমলে নিয়ে পুলিশের আবেদন নাকচ করে দেন। প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ভিডিও কলে জেলখানা থেকে ডা. শাহাদাত হোসেনকে ভার্চুয়াল কোর্টে যুক্ত করা হয়। তার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতেই শুনানি হয়।
এদিকে পুলিশের করা এ দুই মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে বারবার ব্যর্থ হয়ে জজ কোর্টে জামিনের আবেদন করে ডা. শাহাদাতের আইনজীবীরা। তবে নানা কারণে সে বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। শাহাদাতের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. এনামুল হক এ বিষয়ে আজাদীকে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন চেয়ে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এরপর আমরা জজ কোর্টে আবেদন করি। কিন্তু এর মধ্যে করোনার কারণে ৭ দিনের লকডাউনে কোর্ট বন্ধ থাকায় জামিন বিষয়ে শুনানি হয়নি। এখন তো উচ্চ আদালতের নির্দেশে ভার্চুয়ালি শুনানি চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৮ তারিখ শুনানির জন্য তারিখ রয়েছে। আশা করছি সেদিন শুনানি হবে এবং ডা.শাহাদাত হোসেন জামিন পাবেন।
এর আগে গত ৩১ মার্চ উক্ত দুই মামলায় (পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের কাজীর দেউড়িতে সংঘর্ষের ঘটনা) গ্রেপ্তার বিএনপির ১১ নেতাকর্মীর ১ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর ও ৫ নারী নেত্রীর রিমান্ড নাকচ করে দিয়েছিলেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, কাজীর দেউড়িতে গত ২৯ মার্চের সহিংসতার ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের হয়। একটির বাদী নগর ট্রাফিক পুলিশের (দক্ষিণ বিভাগ) সার্জেন্ট মো. আমজাদ হোসেন। অপরটির বাদী কোতোয়ালী থানার সিআরবি পুলিশ ফাড়ির এসআই রবিউল ইসলাম। সার্জেন্ট আমজাদ হোসেনের মামলায় (মামলা নম্বর ৯৬/৩/২১) ৫৮ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ১৮৬, ১৮৯, ৩০৭, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩ ধারা, বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৪, ৫ ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এসআই রবিউল ইসলামের অপর মামলায় ( মামলা নম্বর ৯৫/৩/২১) ৪৩ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩, ১৮৬, ৩৩২, ৩৩৩, ৩৫৩ ধারা ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ৬ (১) এর (ক) (আ) (ই) (উ) ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ সকালে চকবাজার থানায় ডা. শাহাদাত হোসেনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও অপহরণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন নগর বিএনপি নেত্রী ডা. লুসি খান। পরে বিকালে পাঁচলাইশের ট্রিটমেন্ট হাসপাতাল থেকে ব্যক্তিগত সহকারীসহ ডা. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। এরপর আদালতের নির্দেশে কোতোয়ালী থানার দুই মামলাতেও ডা. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।