প্রথিতযশা চিকিৎসা বিজ্ঞানী, সমাজ সংস্কারক, শিক্ষক, মাতৃভক্ত ব্যক্তিত্ব জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের উজ্জ্বল পদচারণা ছিল সমাজের সকল স্তরের মানুষের প্রতি নিবেদিত। বাংলাদেশ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার প্রস্তুতকৃত শিক্ষা ও চিকিৎসা নীতিমালা চিরন্তনী হয়ে আজো চর্চিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আইএএইচএস তথা ইউএসটিসি’তে দেশী ও বিদেশী শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর চিকিৎসা শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ ও জাতির জন্য সম্মান বয়ে আনছে। গতকাল আইএএইচএস, ইউএসটিসি এবং আনোয়ারা নূর নার্সিং কলেজ এন্ড ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আইএএইচএস ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। দিবসের শুরুতে নুরুল ইসলামের আত্মার মাগফেরাতের উদ্দেশ্যে কবরস্থানে খতমে কোরআন এবং তার সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএসটিসি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক ইউসুফ, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, আইএএইচএস’র সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. বদিউল আলম ও আইএএইচএস’র সাইকিয়াট্রির বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. শফিউল হাসান। স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন আইএএইচএস’র এনাটমি বিভাগের অধ্যক্ষ ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. রমা বড়ুয়া। বক্তারা জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
বক্তব্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেছেন, জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের অন্যতম সেরা চিকিৎসক। তিনি অসংখ্য মানুষের চিকিৎসা করে এতটাই সুনাম অর্জন করেছেন যে দেশের অধিকাংশ লোক তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এমনকি ডা. নুরুল ইসলামকে নিয়ে কবি জসীমউদ্দীন ও সুফিয়া কামাল কবিতাও রচনা করেছেন। তিনি পিজি ইনস্টিটিউটকে প্রায় শূন্যাবস্থা থেকে সুদীর্য বাইশ বছর ধরে তিলে তিলে একে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রশংসাধন্য একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়ন করে দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন।
তিনি বলেন, অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলাম ধূমপান নিবারণের জন্য ‘আধূনিক’ প্রতিষ্ঠা করে এর কার্যক্রম এতটা বিস্তৃত করেছেন যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তিন বার বিশেষ পদক প্রদান করেছেন। চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে দেশ বিদেশের ছাত্রছাত্রীরা চমৎকার পরিবেশে অত্যন্ত উঁচু মানের শিক্ষা গ্রহণ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে হাসপাতাল, অডিটোরিয়াম, আবাসিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি আছে। জাতীয় অধ্যাপক ডা. নুরুল ইসলামের অবদান সমাজ ও দেশে অপরিসীম। তিনি শুধু বিখ্যাত চিকিৎসকই নন, অসাধারণ সাংগঠনিক ক্ষমতার অধিকারীও বটে। তিনি সব ডিসির কাছে ডিও লেটার লেখেন যাতে প্রত্যেক জেলায় যক্ষ্মা সমিতি গঠন করে সারাদেশে আন্দোলন গড়ে তোলা হয়। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেশজুড়ে জেলা শাখা গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন ডা. ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা।