যুক্তরাজ্যে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মুসলিম ও অভিবাসীদের ওপর কট্টর–ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর সহিংস বর্ণবাদী হামলার পর তাদের প্রতিরোধ করতে বুধবার হাজার হাজার বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারী ও পুলিশ দেশটির সড়কগুলোতে অবস্থান নেয়। গত সপ্তাহে ইংল্যান্ডের সাউথপোর্ট শহরে একটি নাচের কর্মশালায় ছুরি হামলায় তিন শিশু নিহত হওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে ১৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ব্যাপক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। খবর বিডিনিউজের। হামলার গ্রেপ্তার সন্দেহভাজন কিশোর এঙেল মুগানওয়া রুডাকুবানা মুসলিম শরণার্থী, অনলাইনে এমন একটি গুজব ছড়ানোর পর যুক্তরাজ্যজুড়ে শহর ও নগরগুলোতে মুসলিম ও অভিবাসী–বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়। অনলাইনের পোস্টগুলো থেকে জানা যায়, ডানপন্থি, মুসলিমবিরোধী বিক্ষোভকারীরা বুধবার তালিকা ধরে ধরে অভিবাসন কেন্দ্র, অভিবাসী সহায়তা কেন্দ্র ও বিশেষায়িত আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালাতে পারে। এই খবর ছড়ানোর পর বহু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অনেক দোকান তাদের জানালাগুলো বোর্ড দিয়ে ঢেকে দেয়। তবে এই খবরের পর লন্ডন, ব্রিস্টল, বার্মিংহাম, লিভারপুল ও হেস্টিংস শহরের রাস্তায় হাজার হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়, এর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারী হাতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, কট্টর ডানপন্থিদের থামাও এবং শরণার্থীদের জন্য বর্ণবাদীদের বেচবো– এরকম বহু শ্লোগান লেখা ব্যানার নিয়ে রাস্তায় দাঁড়ায়। রয়টার্স জানিয়েছে, এই প্রতিবাদকারীদের মধ্যে বিভিন্ন জাতির মুসলিমরা, বর্ণবাদবিরোধীরা, ফ্যাসিস্ট বিরোধী গোষ্ঠীগুলো, শ্রমিক সংগঠনগুলো, বামপন্থি বিভিন্ন সংগঠন ও দাঙ্গার কারেণে আতঙ্কিত স্থানীয়রা যোগ দিয়েছিলেন। এরপর থেকে বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত কোথাও গুরুতর কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ লন্ডনের ক্রয়ডনে ৫০ জন লোকের একটি দল বোতল ছুড়ে মেরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল। উত্তর লন্ডনে বিক্ষোভে যোগ দেওয়া স্টেটসন ম্যাথিউ (৬৪) বলেন, জনগণের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে কিন্তু সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালিয়ে দেশকে প্রান্তে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হেস্টিংসে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়া এক নারী জানান, বিক্ষোভে এতে মানুষ যোগ দিয়েছে দেখে তিনি মুক্ত বোধ করছেন।