ডাকাতি করতে ঢুকে ধর্ষণ ৫ জনের ‘ডাবল’ যাবজ্জীবন

কর্ণফুলীর বড় উঠানের ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠান এলাকার এক বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে দুই নারীকে ধর্ষণের মামলায় ৫ জনকে দুইবার করে ‘ডাবল’ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মিজান মাতব্বর প্রকাশ শহীদ ডাকাত (৪৫), আবু সামা (৩৭), মহিদুল ইসলাম মুন্সি (৩১) ও তার ছোট ভাই জহিরুল ইসলাম হাওলাদার (২৪) ও ইলিয়াস শেখ প্রকাশ সুমন (৩৬)। এর মধ্যে ইলিয়াস শেখ ঘটনার পর থেকে পলাতক। খালাস পাওয়া ব্যক্তির নাম মো. আবদুল হান্নান প্রকাশ হান্নান মেম্বার (৪২)। গতকাল বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক মঈন উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় ২১ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি নজরুল ইসলাম সেন্টু আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, এখানে ডাকাতি ও ধর্ষণ দুটো ঘটনা ঘটেছে। যার কারণে আসামিরা ‘ডাবল’ সাজা পেয়েছেন। ডাকাতির ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুটি সাজা একসাথেই চলবে। তিনি আরো বলেন, রায়ে হান্নান মেম্বারকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আমরা তাতে অসন্তুষ্ট। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে অবশ্যই আপিল করা হবে।
আদালত সূত্র জানায়, কর্ণফুলী উপজেলার বড় উঠানের ওই বাড়িতে ঢুকে ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে ডাকাতি ও ধর্ষণ ঘটনা ঘটায় ৬ জন পেশাদার ডাকাত। ঘটনার পরপর চার নারীকে (আপন তিন ভাইয়ের স্ত্রী ও বেড়াতে আসা তাদের এক ননদ) ধর্ষণের কথা বলা হলেও পিবিআইয়ের তদন্তে বের হয়ে আসে দুই নারী ধর্ষণের কথা। একপর্যায়ে পিবিআই ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট ৬ ডাকাতকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। পরের বছরের ২২ নভেম্বর পিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ হয়।
আদালত সূত্র আরো জানায়, কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা প্রত্যেকে পেশাদার ডাকাত। এ অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মূলত বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে তারা ডাকাতি করেন। বড় উঠানের ওই বাড়িতেও তারা ডাকাতি করতে ঢুকেছিলেন। তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সেটাই। কিন্তু একপর্যায়ে তারা তাদের উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটায়। কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে তিনজনের দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, চার বছর আগের এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কর্ণফুলী থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। পরে তৎকালীন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে পাঁচদিন পর মামলা নেয় পুলিশ। সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে (আবু, ফারুকী ও বাপ্পী)। কিন্তু ঘটনার সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততাও ছিল না। পরে অবশ্য পিবিআইয়ের আদালতে দেওয়া চার্জশিট থেকে তাদেরকে বাদ দেওয়া হয় এবং অব্যাহতির জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকানাডার উদ্দেশে বিমানবন্দরে মুরাদ হাসান
পরবর্তী নিবন্ধমুরাদের অশ্লীল বক্তব্যের ৯৬টি লিংক সরানো হয়েছে