দীর্ঘদিন দরে ভোগ্যপণ্যের বাজার চড়া। ব্যবসায়ীদের দাবি-আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বাড়ার কারণে তেল-চিনি ও ডালের মতো প্রায় সব ধরনের বাজার বাড়তি। তবে বুকিং বাড়ার সাথে সাথে দেশের বাজারে বেড়েছে ডলারের দামও। গত দেড় মাস আগে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে প্রতি ডলার নেগোশিয়েট হতো ৮৪ টাকা ৮৫ পয়সা। বর্তমানে সেটি ৫৫ পয়সা বেড়ে গিয়ে নেগোশিয়েট হচ্ছে ৮৫ টাকা ৪০ পয়সা ধরে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের এমন মূল্যবৃদ্ধিতে ভোগ্যপণ্যের আমদানির ব্যয় বাড়ার সাথে সাথে পণ্যের দাম আরো বেড়ে যাবে।
গতকাল সোমবার খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ভোগ্যপণ্যের আমদানিকারকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত তিন মাস ধরে এমনিতেই আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরণের ভোগ্যপণ্যের বুকিং দর বেড়েছে। এর মধ্যে তেলের অস্থিরতা ছিল সবচেয়ে বেশি। তেলের সাথে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্ত হয়েছে সব ধরণের ডাল ও গম-চিনির বাজার। তবে ঠাণ্ডা রয়েছে গরম মসলার বাজার।
খাতুনগঞ্জ সূত্র জানায়, গত দুই সপ্তাহে মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) পাম তেল বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ টাকা। বর্তমানে ২২০ টাকা বেড়ে গিয়েছে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৬২০ টাকায়। এছাড়া সয়াবিন মণে ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৯০০ টাকায়। চিনির দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়ে গিয়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকায়। অন্যদিকে মশুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮৩ টাকা, মুগ ডাল ৫ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকা, মটর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪০ টাকা এবং সাদা মটর কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ টাকায়। অন্যদিকে গম মণপ্রতি ২৫০ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪৫০ টাকা। তবে কমতির দিকে গরম মসলার বাজার। বর্তমানে এলাচ কেজিপ্রতি ১০০ কমে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, দারচিনি ১০ টাকা কমে ২৯০ টাকা, লবঙ্গ ৫০ টাকা কমে ৯০০ টাকা এবং জিরা ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৬৫ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের শীর্ষ আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের কর্ণধার আবুল বশর চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, হঠাৎ করে ডলারের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি আসলে আমাদের বোধগম্য নয়। যদিও বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরণের পণ্যের বুকিং রেট বেড়ে গেছে। ফলে ডলারের চাহিদাও বেড়ে গেছে। তবে আমাদের তো বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভালো। এটি নিশ্চিত ডলারের দাম বৃদ্ধি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে আরো প্রভাব পড়বে। গত দেড় মাসে প্রতি ডলারের দাম বেড়েছে ৫৫ পয়সা মতো।
জানতে চাইলে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, খাতুনঞ্জে বর্তমানে সব ধরণের পণ্যের দাম বাড়তি। আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এখন দেশের বাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে স্বাভাবিকভাবে আমদানি ব্যয় বাড়বে। আমদানি ব্যয় বাড়ার অর্থ হচ্ছে-পণ্যের দাম আরো বেড়ে যাওয়া।