এবার ডজন খানেক দেশি–বিদেশি ব্যাংকের নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচার প্রমাণ পেয়ে অধিকতর তদন্তে নামছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রধান বিদেশি মুদ্রা ডলারের সরবরাহ সংকটের মধ্যে এ বিষয়ক নির্দেশনা অমান্য করায় উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষে বলা যাবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা ভেঙেছে কি না। তদন্তে পাওয়া ফলাফলের ভিত্তিতে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। তবে ব্যাংকগুলোর নাম এবং কোন সময় তারা কত বেশি দরে ডলার বেচেছে তা বলতে চাননি। তদন্তের পরই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর কথা বলেছেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
এসব ব্যাংক ডলার বিনিময়কারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন ফরেন এঙচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) বেঁধে দেওয়া দর না মেনে বাড়তি দরে ডলার কেনাবেচা করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেশি দরে ডলার কেনাবেচা করেছে এমন দেশি–বিদেশি ১৩টি ব্যাংকের তথ্য পাওয়া গেছে। দেশি ব্যাংকর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংক যেমন রয়েছে, তেমনি এর আগে অতিরিক্ত দরে ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শাস্তির মুখে পড়া ব্যাংকের নামও রয়েছে। বাফেদা ও ব্যাংকের নির্বাহীদের সংগঠন (এবিবি) ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে ডলারের দর নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছে। সদস্য ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন সকালে রপ্তানি আয়, আমদানি ও রেমিটেন্সের জন্য ডলারের আলাদা দর জানিয়ে দিচ্ছে বাফেদা।
এ দর মেনেই ব্যাংকগুলোর বাংলাদেশের প্রধান বিদেশি মুদ্রা ডলার কেনাবেচা করার কথা থাকলেও অনেক ব্যাংক তা মানছে না বলে অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে র্নিধারিত দর না মানার অভিযোগ দেয় বাফেদা ও এবিবি। পরে সংগঠন দুটির যৌথ স্বাক্ষরে গত ৩ জুলাই ব্যাংকগুলোকে সর্তক করে এ বিষয়ে চিঠিও দেওয়া হয়। এতে বলা হয়েছিল, বিনিময় হারের একক দর নিধারণে বাফেদা ও এবিবি ডলারের যে দর নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল গত ২৬ জুন–তা ২ জুলাই থেকে কার্যকর হয়। কিছু ব্যাংক নির্ধারিত সীমার বেশি দরে ডলার কেনাবেচা করছে। যেসব ব্যাংক এটি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বলা হবে। একই চিঠিতে ব্যাংকগুলো ডলারের দর ব্যাংকের ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও সংরক্ষণ করতে বলা হয়।
এর আগে গত বছরের আগস্টে অতিরিক্ত দরে ডলার কেনাবেচা করায় দেশি–বিদেশি ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসরাণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময়ে ব্র্যাক, সিটি, প্রাইম, ডাচ–বাংলা, সাউথইস্ট ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের নাম প্রকাশ হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। এসব ব্যাংকের কাছে কৈফিয়ত চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।