শুধুমাত্র সামান্য আলসতার কারণেই লরির উপর থেকে কন্টেনার ছিটকে পড়ে পিতা–পুত্রের মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনাটি ঘটল। কন্টেনারটি নিয়ম মাফিক মোটা চেইন বা ফিতা দিয়ে বাঁধা থাকলে ব্রেক কষা কিংবা গাড়ি ডানে বামে করার ফলে এটি ছিটকে পড়তো না। মাত্র কয়েক মিনিট সময় বাঁচানোর জন্য আলসে করে চেইন কিংবা ফিতার বাঁধ দিয়ে লেসিং করা হয়নি বলে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছে পুলিশ।
ঘটনার ব্যাপারে রুজুকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রূপক কান্তি চৌধুরী গতকাল আজাদীকে বলেন, যেভাবে কন্টেনারটি বাঁধা থাকার কথা সেভাবে বাঁধা ছিল না। এতে করে কন্টেনারটি ছিটকে পড়েছে। ঘটনার পরই চালক মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনকে আটক করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, রপ্তানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারের চেয়ে আমদানি পণ্য বোঝাই কন্টেনারের ওজন অনেক বেশি থাকে। বিদেশ থেকে পণ্য বোঝাই করে আনা এক একটি কন্টেনারের ওজন সচরাচর ১৫ থেকে ২০ টন হয়ে থাকে। এসব কন্টেনার লরির উপর স্থাপন করলে অটো লক হয়ে যায়। লরির বডির চার কোণায় চারটি উঁচু খুঁটির মতো থাকে। কন্টেনারের চার কোণায় থাকে চারটি ছিদ্র। ওই ছিদ্রগুলো লরির উক্ত খুঁটির উপর বসে অটো লক হয়ে যায়। যেটিকে টুইস্ট লক বলা হয়। উক্ত চারটি ছিদ্র যথাযথভাবে স্থাপিত না হলে কন্টেনার লরির উপর বসবে না এবং থাকবেও না। তবে দেশের রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে উক্ত চারটি ছিদ্রের মাধ্যমে যে টুইস্ট লক হয় তার উপর ভরসা করা যায় না। কন্টেনারকে মোটা চেইন কিংবা ফিতা দিয়ে আলাদা করে লেসিং করতে হয়।
গতকাল স্টিলমিল বাজারে যে কন্টেনার চাপা পড়ে হতভাগ্য পিতাপুত্রের মর্মান্তিক প্রাণহানি ঘটেছে সেটি টুইস্ট লক করা থাকলেও লেসিং করা ছিল না। স্টিলমিল বাজারের খারাপ রাস্তায় দ্রুতগতির লরি কড়া ব্রেক কষার পর কন্টেনারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে। লেসিং করা থাকলে কন্টেনারটি হয়তো এভাবে ছিটকে পড়তো না।