গত এপ্রিলে বিদায়ের আগাম ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে ধারায় ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দিলেন অ্যালিসন ফেলিক্স। সাফল্যে ঠাসা ক্যারিয়ারের শেষটাও তিনি করলেন পদক জিতে। ওরিগানে শুরু হওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার রিলেতে ব্রোঞ্জ পেয়েছে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্র। ফেলিক্সের শেষটা তাই হয়েছে ব্রোঞ্জ জয়ের মধ্য দিয়ে। ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ আসর অলিম্পিকসে ফেলিক্স জিতেছেন ১১টি পদক, এর মধ্যে সাতটি সোনা। এর সঙ্গে আছে ১৮টি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার পদক, যার মধ্যে ১৩টি সোনা। তাকে বলা হয় মেয়েদের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের সবচেয়ে সাফল্যমন্ডিত এবং সর্বকালের সেরা অলিম্পিয়ানদের একজন। গত বছর টোকিও অলিম্পিকসেও দৌড়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে বর্ণিল ক্যারিয়ারে অংশ নিয়েছেন পাঁচটি অলিম্পিকসে।
ওরিগানের আসর নিয়ে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ্সের ১০টি আসরে অংশ নেওয়ার চক্র পুরণ করলেন ফেলিক্স। প্রিয় খেলাটিকে বিদায় বললেন নিজ দেশের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে। ‘এখানে আসতে পারা এবং নিজ দেশে শেষ করতে পারাটা হবে একটা চক্র পূরণ। এটা খুবই বিশেষ, বিশেষ কিছু হতে যাচ্ছে আমার জন্য’, শেষবারের মতো ট্র্যাকে নামার আগে বলেছিলেন ফেলিক্স। যুক্তরাষ্ট্র দলের হয়ে অলিম্পিকসে ৪০০ মিটার রিলেতে চারটি, ১০০ মিটার রিলেতে দুটি সোনা জেতেন ফেলিক্স। অলিম্পিকে একমাত্র ব্যক্তিগত ইভেন্টে তিনি সেরার মুকুট পরেন ২০০ মিটারে, ২০১২ লন্ডন আসরে। ২০০৪ সালে এথেন্সের আসরে ২০০ মিটারে রুপা জয়ের মধ্য দিয়ে অলিম্পিকসে প্রথম পদক জয় করেন ফেলিক্স। তখন তার বয়স মাত্র ১৮ বছর। এরপর অলিম্পিকসের আঙিনায় দৌড়েছেন টোকিওর আসর পর্যন্ত। সবশেষ অলিম্পিকসে ৪০০ মিটার রিলের সোনা এবং মেয়েদের ব্যক্তিগত ৪০০ মিটারে টোকিওতে ব্রোঞ্জ পান তিনি।
চলার পথটা মসৃণ ছিল না ফেলিক্সের। ছোটবেলায় লিকলিকে পায়ের জন্য শুনতে হয়েছে ‘চিকেন লেগস’ বা মুরগির পা- এমন বাঁকা কথাও। সবশেষ ২০১৮ সালে কন্যা সন্তানের জন্ম দিতে গিয়েও প্রাণ সংশয় দেখা দিয়েছিল। উচ্চ রক্তচাপজনিত অসুখ প্রি-একলাম্পসিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার কারণে মাত্র ৩২ সপ্তাহের পরই সন্তানের জন্ম দিতে হয়েছিল তাকে। কেননা ওই রোগ মা-মেয়ে উভয়ের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারত।
বিদায় বেলায় ফেলিক্স অবশ্য ভালো স্মৃতিগুলোই আওড়াতে চাইলেন। ‘অবিশ্বাস্য একটা পথচলা ছিল। এই খেলাটিকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। অনেকবারই খেলাটি আমার হৃদয় ভেঙেছে, কিন্তু খেলাটি নিয়ে সত্যিই আমার অনেক আনন্দের মুহূর্তও আছে।’ কেবল ট্র্যাকেই বিজয়ী নন ফেলিক্স। মানুষের জন্য, বিশেষ করে কৃষাঙ্গ মানুষের জন্য কাজ করছেন তিনি। কাজ করে যাচ্ছেন কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের মাতৃকালীন মৃত্যুর সমস্যাটি সম্মুখে তুলে আনতে। বিদায়ের ইঙ্গিত দেওয়ার সময় বলেছিলেন, এ মৌসুমেও তিনি নারীদের জন্যই চান দৌড়াতে চান।