ঈদের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গতকাল। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু টানা ১০ দিনের ছুটি। আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ছুটি কাটাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
ঈদুল আজহার টানা দশদিনের ছুটি পেয়ে পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ছাড়ছেন এই নগরীর কর্মজীবী লোকজন। বাস–ট্রেনে যে যেভাবে পারছেন পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ির পথ ধরছেন সবাই। গতকাল বুধবার ছিল সরকারি অফিস–আদালত–ব্যাংক–বীমাগুলোতে শেষ কর্মদিবস। অনেকেই অফিসে এসে ঈদের আমেজে অফিসের সহকর্মীদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে বাড়ি পথে ছুটেছেন। এই কারণে গতকাল থেকেই ট্রেন ও বাসগুলোতে ছিল সীমাহীন ভিড়।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশন গিয়ে দেখা গেছে, দুপুরের পর থেকে প্রতিটি ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। বেলা বাড়তে বাড়তেই এই ভিড় আরো বাড়তে থাকে। দুপুরের পরের পরের ট্রেনগুলোতে তিল ধরনের ঠাঁই ছিলনা। একই অবস্থা দেখে গেছে বাস স্টেশনগুলোতেও। প্রতিটি বাস আসার সাথে সাথেই পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আর সাথে সাথে ছেড়ে দিচ্ছে। একই অবস্থা দেখা গেছে, কদমতলী বাস টার্মিনাল এবং বিআরটিসি বাস স্টেশনে আন্ত:নগর বাসগুলোতেও। বিকালে নগরীর কদমতলী, বিআরটিসি, গবিবুল্লাহ শাহ মাজার গেইট, কর্নেলহাট, অলংকার মোড়সহ বেশিরভাগ বাস কাউন্টারে ভিড় করেন ঘরমুখো মানুষ। ট্রেন এবং বাস ধরতে যেন কোনভাবেই দেরি না হয়, তাই আগেভাগেই রেল স্টেশনে এবং বাস টার্মিনাল ও কাউন্টারে যান ঈদযাত্রীরা।
তবে নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়লেও বাস ছাড়ছে না। কেননা মহাসড়কে যানজটের কারণে অনেক বাস নির্ধারিত সময়ে পৌঁছতে পারেনি বলে জানান বাস কাউন্টারের কর্মকর্তারা। এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার আজাদীকে বলেন, আজকে প্রতিটি ট্রেনে সীমাহীন ভিড়। সকাল থেকেই নির্ধারিত সময় পরপর সবকটি ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। ১৬টি আন্ত:নগর ট্রেন এবং একটি স্পেশাল ট্রেন চলছে। প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রীদের ভরপুর ছিল। বৃহস্পতিবার এই ভিড় আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
১৬টি আন্ত:নগর ও একটি স্পেশাল ট্রেন : চট্টগ্রাম থেকে ঈদযাত্রার প্রথম দিন থেকেই ১৬টি আন্ত:নগর ট্রেনে যাত্রী পরিবহন করা হলেও গতকাল থেকে যুক্ত হয়েছে চাঁদপুর স্পেশাল–১ ও ২। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে বলে জানান স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার। এবার ঈদে চট্টগ্রাম–চাঁদপুর–চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে এক জোড়া ট্রেনসহ ১৭টি আন্ত:নগর, মেইল ও লোকাল মিলে প্রতিদিন ১৫ হাজার যাত্রী ট্রেনে করে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন বলে জানা গেছে।
গতকাল চট্টগ্রাম থেকে দেরিতে ছেড়েছে দুটি ট্রেন। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। জানা গেছে, জামালপুরগামী বিজয় এঙপ্রেস নির্ধারিত সময়ের প্রায় তিন ঘণ্টা পরে এবং চাঁদপুরগামী মেঘনা এঙপ্রেস ৩০ মিনিট পরে চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়ে। বিজয় এঙপ্রেস সকাল সোয়া ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ছাড়ে দুপুর সোয়া ১২টায়। আর মেঘনা এঙপ্রেস বিকেল সোয়া ৫টার পরিবর্তে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় ছাড়ে। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন না ছাড়ার কারণে বিপাকে পড়েন মানুষ। তারা ট্রেন ছাড়ার আগেই স্টেশনে চলে আসেন। কিন্তু স্টেশনে আসার পর দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় ট্রেনের জন্য। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আনা মানুষের ভোগান্তি ছিল বেশি।