ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পরিবারের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম ছাড়ছেন নগরবাসী। বাস–ট্রেনে যে যেভাবে পারছেন পরিবার পরিজন নিয়ে বাড়ির পথ ধরছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল সরকারি অফিস–আদালত–ব্যাংক–বীমা গুলোতে শেষ কর্মদিবস। এই কারণে অনেকেই ঈদের আগে–পরের ছুটির সাথে মিলিয়ে গতকালও ছুটি নিয়ে অফিসে আসেননি। আর যারা অফিসে এসেছেন অনেকেই হাজিরা দিয়ে সহকর্মীদের সাথে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা বিনিময় করে বাড়ির পথে ছুটেছেন। এই কারণে গতকাল থেকেই ট্রেন ও বাসগুলোতে ছিল সীমাহীন ভিড়।
চট্টগ্রাম রেল স্টেশন গিয়ে দেখা গেছে, সকাল থেকে প্রতিটি ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। বেলা বাড়তে বাড়তেই এই ভিড় আরো বাড়তে থাকে। দুপুরের পর থেকে প্রতিটি ট্রেনে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। একই অবস্থা দেখা গেছে বাস স্টেশনগুলোতেও। প্রতিটি বাস আসার সাথে সাথেই পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আর সাথে সাথে ছেড়েও দিচ্ছে। একই অবস্থা দেখা গেছে, কদমতলী বাস টার্মিনাল এবং বিআরটিসি বাস স্টেশনে আন্তঃনগর বাসগুলোতেও। সকাল থেকে নগরীর কদমতলী, বিআরটিসি, গরিবুল্লাহ শাহ মাজার গেইট, কর্নেলহাট, অলংকার মোড়সহ বেশিরভাগ বাস কাউন্টারে ভিড় করেন ঘরমুখো মানুষ।
স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে ভোরেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন অনেকে। বাস ধরতে যেন কোনোভাবেই দেরি না হয়; তাই আগেভাগেই টার্মিনাল ও কাউন্টারে যান কেউ কেউ। তবে নির্ধারিত সময়ে বাস ছাড়ছে না। কেননা মহাসড়কে যানজটের কারণে অনেক বাস নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারেনি।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম রেল স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার আজাদীকে বলেন, ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিনেও চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে ছিল যাত্রীদের ভিড়। সকাল থেকেই নির্ধারিত সময়ে সবকটি ট্রেন নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। ১৬টি আন্তঃনগর ট্রেন এবং একটি স্পেশাল ট্রেন চলছে। প্রতিটি ট্রেনেই যাত্রী ভরপুর ছিল। শুক্রবার এই ভিড় আরো বাড়বে বলে জানান তিনি।
স্টেশন মাস্টার বলেন, কোনো শিডিউল বিপর্যয় হয়নি। যাত্রীরা বলছেন, ট্রেনের এবারের ঈদযাত্রা বেশ স্বস্তির।
১৬টি আন্তঃনগর ও একটি স্পেশাল ট্রেন : চট্টগ্রাম থেকে ঈদযাত্রার প্রথম দিন থেকেই ১৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে যাত্রী পরিবহন করা হলেও গতকাল থেকে যুক্ত হয়েছে চাঁদপুর স্পেশাল–১ ও ২। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলবে বলে জানান স্টেশন মাস্টার আবু জাফর মজুমদার।
এবার ঈদে চট্টগ্রাম–চাঁদপুর–চট্টগ্রাম রুটে চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ১ ও ২ নামে এক জোড়া ট্রেনসহ ১৭টি আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল মিলে প্রতিদিন ১৫ হাজার যাত্রী ট্রেনে করে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারবেন বলে জানা গেছে।
বাস মালিক সমিতির এক কর্মকর্তা জানান, ঈদ উপলক্ষে দূরপাল্লার বাস গুলোতে যাত্রীদের চাপ বেড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার গার্মেন্টস ছুটি হওয়ায় এই চাপ বেড়েছে। ঈদে অন্যান্যবারের মতো এবারও প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে ৩০ হাজার–৪০ হাজার যাত্রী যেতে পারবেন বলে জানান আন্তঃনগর বাস মালিক সমিতির ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ৫০ থেকে ৬০টি রুটে প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ৬শ’ গাড়ি যাবে যাত্রী নিয়ে।