ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার বাকবিতণ্ডাপূর্ণ বৈঠক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনের জন্য কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ সহায়তার সম্ভাবনা এতে আরও ক্ষীণ হয়েছে। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজে ওভাল অফিসের বৈঠকে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ট্রাম্প ও জেলেনস্কি। যে রিপাবলিকানরা দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে সমর্থন করে এসেছেন, তারা শুক্রবারের বৈঠকে ওই বাকবিতণ্ডার জন্য জেলেনস্কির কঠোর সমালোচনা করেছেন। ওই বৈঠকে ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স প্রকাশ্যে ইউক্রেনীয় নেতাকে অপমান করেন এবং তাকে ‘অশ্রদ্ধাশীল’ বলে অভিযুক্ত করেন। খবর বিডিনিউজের।
সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে তার সুর নরম করা, নয়ত পদত্যাগ করতে বলেন। জেলেনস্কির সমালোচনা করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওভাল অফিসে যা দেখেছি, তা খুবই অশ্রদ্ধাশীল ছিল। আমি জানি না, আর কখনও আমরা জেলেনস্কির সঙ্গে ব্যবসা করতে পারব কিনা।
বেশিরভাগ রিপাবলিকানই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের পক্ষ নিলেও, কয়েকজন রিপাবলিকান আবার ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মিলে ইউক্রেনের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। নিউ ইয়র্কের প্রতিনিধি মাইক ললার এঙে লেখেন, ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের বৈঠকে উভয়ের জন্যই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে– একটি চুক্তি হতে পারেনি, যা নিঃসন্দেহে দুই দেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও জোরদার করত। নেব্রাস্কার মধ্যপন্থি রিপাবলিকান প্রতিনিধি ডন বেকন ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির জন্য এ এক খারাপ দিন। ইউক্রেইন স্বাধীনতা, মুক্ত বাজার ও আইনের শাসন চায়। তারা পশ্চিমা বিশ্বের অংশ হতে চায়। রাশিয়া আমাদেরকে এবং আমাদের পশ্চিমা মূল্যবোধকে ঘৃণা করে। আমাদের স্পষ্টই জানানো উচিত যে, আমরা স্বাধীনতার পক্ষে।
তবে কোনও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাই সরাসরি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের সমালোচনা করেননি। রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে মার্কিন কংগ্রেস কিয়েভের জন্য ১৭ হাজার ৫০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা অনুমোদন করেছে। তবে সর্বশেষ সহায়তা বিল পাস হয়েছে গতবছর এপ্রিলে।
সে সময় ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে ছিল সিনেট ও হোয়াইট হাউজ। তখনও রিপাবলিকানরা সহায়তা বিল পাসের গতি মন্থর করে দিয়েছিল তখনকার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্পের চাপের মুখে। ফলে ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহে বিলম্ব হয় এবং এতে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেইনীয় সেনারা অসুবিধায় পড়ে।