ট্রাম্পের নীতিতে অসন্তুষ্ট মার্কিন জনতা, আমেরিকা জুড়ে ক্ষোভ

জার্মানি ফ্রান্স ব্রিটেন পর্তুগালেও অসন্তোষের ছবি

| সোমবার , ৭ এপ্রিল, ২০২৫ at ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

সবে তিন মাস হয়েছে আমেরিকায় ক্ষমতায় ফিরেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নেওয়ার ৭৬ দিনের মধ্যেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মার্কিন জনতা। নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসি, ফ্লোরিডা, মিনেসোটা, ডেলাওয়ার, ক্যালিফোর্নিয়া, কেন্টাকি, মিশিগান, টেক্সাস, কানেটিকাট, নিউ হ্যাম্পশায়ার, লস অ্যাঞ্জেলসসহ আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন আমেরিকার সাধারণ মানুষ। শুধু আমেরিকাতেই নয়, জার্মানি, ফ্রান্স, ব্রিটেন, পর্তুগালেও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অসন্তোষের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গতকাল রবিবারের (বাংলাদেশ সময় অনুসারে) পর আজ সোমবারও আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের সম্ভাবনা রয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, ইলন মাস্কের মালিকানাধীন টেসলার বেশ কিছু শোরুমের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে পারেন মার্কিন জনতা।

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক নীতি ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অসন্তোষ দানা বেঁধেছে মার্কিন জনতার মনেও। রবিবার তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল গোটা আমেরিকা জুড়ে। প্রায় হাজার দশেক মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এমন ব্যাপক পরিসরে প্রতিবাদ এই প্রথম। কাঁধে আমেরিকার পতাকা, হাতে পোস্টারপ্ল্যাকার্ড। গত বছর ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের অন্যতম স্লোগান ছিল ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেন’ অর্থাৎ, আমেরিকাকে আবার মহান করা হোক। যে স্লোগান ট্রাম্পকে ক্ষমতায় ফিরিয়েছে, সেই স্লোগানেরই বিরোধিতা দেখা গেল বিক্ষোভে। আমেরিকার রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদ দেখা গেল, ‘মহান নয়, স্বাভাবিক করা হোক আমেরিকাকে’।

টেসলার মালিক ইলন মাস্ক বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম পরামর্শদাতা। আমেরিকার সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। ইলন ওই দফতরের দায়িত্ব গ্রহণের পরে প্রচুর ফেডারেল কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়েছে বিভিন্ন দফতর থেকে। অবশ্য তার দাবি, তিনি আমেরিকার করদাতাদের টাকা ‘অকাজে’ ব্যয় হওয়া আটকাচ্ছেন। সমপ্রতি একের পর এক সরকারি দফতরে কর্মীছাঁটাই ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দানা বেঁধেছে। এ ছাড়া ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমেরিকায় রূপান্তরকামীদেরও চিন্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন সেনায় রূপান্তরকারীদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। যদিও ওই সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। প্রতিবাদ, বিক্ষোভে প্রচুর রূপান্তরকামীও শামিল হয়েছিলেন।

ট্রাম্পের সামপ্রতিক শুল্কনীতিতে অন্য দেশগুলি যেমন প্রভাবিত হয়েছে, তেমন প্রভাব পড়েছে আমেরিকায়ও। আমেরিকার শেয়ার বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের আবহে ওয়াল স্ট্রিটের টালমাটাল পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি শুল্কনীতির জন্য আমেরিকার বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে মার্কিন জনতার।

ট্রাম্পের দ্বিতীয় জমানায় প্রশ্ন উঠেছে আমেরিকায় সামাজিক সুরক্ষার বিষয়েও। সে দেশের বেশ কিছু সামাজিক সুরক্ষা অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলির পাশাপাশি ট্রাম্প জমানার বিদেশনীতি নিয়েও ক্ষোভ জমেছে সে দেশের সাধারণ মানুষের একাংশের মনে। ইউক্রেন, গাজা, কানাডা, গ্রিনল্যান্ডের বিষয়ে আমেরিকার অবস্থানের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড উঁচিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে আমেরিকার মাটিতেই। প্রশ্ন উঠেছে আন্তর্জাতিক সামরিক জোট ‘নেটো’য় আমেরিকার ভূমিকা নিয়েও। খবর বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৬৫ হিসাবে ৭২২ কোটি টাকা লেনদেন, স্ত্রীসহ আসামি হাছান মাহমুদ
পরবর্তী নিবন্ধকারাগারে আওয়ামীপন্থি ৮৪ আইনজীবী, ৯ জনের জামিন