মীরসরাই প্রতিনিধি
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিন দিন বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। সময়ের প্রয়োজনে তাই সড়ক ফোর লেন করা হলেও নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনায় তার সুফল মিলছে না কিছুতেই। নিত্যই লেগে থাকে যানজট। প্রায়ই দেখা যায় সদাব্যস্ত এই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পয়েন্টে ট্রাক থামিয়ে ঘুমাচ্ছেন চালক ও হেলপার। কারো অসুবিধা বা যানজট লেগে গেলেও তাতে যেন কারো যায় আসে না কিছুই।
সরজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গত এক দশকে বাস-ট্রাক থেকে শুরু করে সকল প্রকার যানবাহন অন্তত দশগুণ বেড়েছে। কিন্তু সড়ক প্রশস্ত হয়েছে মাত্র দুইগুণ বা তিনগুণ। অতিরিক্ত এই গাড়ির চাপ সামলাতে যেমন হিমশিম খাচ্ছে সড়ক বিভাগ, তেমনি বিপাকে পড়ছে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশ। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বছরে বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হলেও তা টেকে মাত্র কয়েকদিন। শুষ্ক মৌসুম হোক বা বর্ষা অতিরিক্ত গাড়ির চাপে তাতে দুয়েকদিনের মধ্যে তৈরি হয় ছোট-বড় গর্ত। এর মধ্য দিয়ে দ্রুতগামী গাড়ি কিংবা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে চলতে হয় মারাত্মক ঝাঁকুনির মধ্য দিয়ে। অনেক সময়ই দেখা যায় মহাসড়কের বিশেষ কোনো অংশে প্রায়ই লাইন ধরে অতীব ধীরগতিতে চলতে হয় যানবাহনকে। এভাবে শম্বুক গতিতে চলতে চলতে কোথাও কোথাও লেগে যায় দীর্ঘ যানজট। কিন্তু জটের কেন্দ্রবিন্দু পার হতে গিয়ে দেখা মিলে সড়কের বিশাল অংশ দখল করে রেখে কোনো ট্রাকচালক রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে তাতে নাক ডেকে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মিঠাছরা এলাকায় এক ট্রাকচালক সড়কের উপরে গাড়ি থামিয়ে ঘুমাচ্ছেন। সামনে-পেছনে লেগে গেছে ছোটখাট যানজট। ঘুমন্ত চালকের ছবি তুলতে গেলে ধড়ফড় করে উঠে পড়েন তিনি। তবে একটু পরই আবার ঘুমিয়ে পড়েন। পাশে থাকা হেলপার আলাউদ্দিনকে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে ঘুমানোর কারণ জানতে চাইলে বলেন, আমরা রংপুর থেকে সারারাত গাড়ি চালিয়ে এসেছি। ওস্তাদ (চালক রশিদুল ইসলাম) খুব ক্লান্ত। একটু বিশ্রামের পর চলে যাব। মিঠাছরার এই একই চিত্র দেখা গেল সোনাপাহাড়, নিজামপুর, মস্তাননগর প্রভৃতি অংশে।
এই বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের জোরারগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক শরফুদ্দিন বলেন, সরকার ইতিমধ্যে মহাসড়ককে আধুনিকায়ন ও সিঙ লেন করতে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চালকদের বিশ্রামের জন্য বাস বেও থাকবে সেখানে। এর বাস্তবায়ন হলে অনেক সংকটই লাঘব হবে।
ফোর লেনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, সরকার এই ফোর লেনকে সিঙ লেন করার পরিকল্পনা হাতে রেখেছে। তবে তা কখন বাস্তবায়ন হবে এখনো সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। যাত্রীদের নিরাপদ যাত্রায় সড়ক সংস্কার ব্যবস্থাপনাকে আরো জোরদার করা হবে- তিনি যোগ করেন।