আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা। গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলির কার্যালয়ে তিনি এ অভিযোগ দায়ের করেন। পরে প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। এখন থেকেই তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা ছাড়া আরও কয়েকজন রয়েছেন বলে জানান তাজুল।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নিখোঁজ হওয়া ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমা সকালে ট্রাইব্যুনালে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ। খবর বিডিনিউজের।
সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবার ও দল অভিযোগ করে। এরপর তার কোনো হদিস মেলেনি পাঁচ বছর। সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাইকেল চাকমাকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) কথিত বন্দিশালা আয়নাঘর এ আটকে রাখা হয়েছিল। ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দুদিন পর তার খোঁজ মেলে।
গত ৭ আগস্ট এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগের প্রধান নিরন চাকমা দাবি করেন, ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয় মাইকেল চাকমাকে।
ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি নুতন কুমার চাকমা এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ পাঁচ বছরের বেশি সময় বন্দি করে রাখা হয়।
মাইকেল চাকমাকে উদ্ধারের দাবিতে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইকেল চাকমার সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিল।