টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মাহমুদউল্লাহ

| বৃহস্পতিবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২১ at ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

গত ১১ জুলাই, হারারে টেস্টের শেষ দিনে মাঠে নামার সময় সতীর্থদের কাছ থেকে গার্ড অব অনার পান মাহমুদউল্লাহ। টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথা তিনি ড্রেসিং রুমে সতীর্থদের জানান বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। টিভি ধারাভাষ্যকাররাও পরে জানিয়ে দেন অবসরের কথা। কিন্তু এরপর এটি নিয়ে চলতে থাকে নানা লুকোচুরি, ছড়াতে থাকে ধোঁয়াশা। অবশেষে সেই টেস্ট শেষ হওয়ার চার মাসের বেশি সময় পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হলো টেস্ট থেকে তার অবসর। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিবৃতিতে দিয়ে মাহমুদউল্লাহর অবসর নিশ্চিত করে বিসিবি। খবর বিডিনিউজের।
জুলাইয়ে ওই টেস্ট দিয়েই দেড় বছর পর টেস্টে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ। ফেরার ম্যাচে দলের চরম বিপর্যয়ের মধ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে খেলেন ১৫০ রানের অসাধারণ ইনিংস। পরে ম্যাচের তৃতীয় দিনেই তিনি ড্রেসিং রুমে এই সংস্করণ ছাড়ার কথা জানান বলে শোনা যায়। টেস্টের শেষ দিনে তিনি গার্ড অব অনার পেলেও ম্যাচের পর অধিনায়ক মুমিনুল হক কিংবা তিনি নিজে, কেউই খোলাসা করেননি কিছু। পরে তার হঠাৎ অবসর নিয়ে বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান।
অগাস্টের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে টেস্ট অবসর নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে মাহমুদউল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে শিগগিরই আপনাদের বিস্তারিত জানাব। পরে সেপ্টেম্বরে বোর্ড সভা শেষে বিসিবি সভাপতি বলেন, এটা (মাহমুদউল্লাহর অবসর) এখনও পেন্ডিং আছে। অবশেষে তার অবসর রহস্যের জট খুলল। যদিও এই টানাপোড়েনের কারণ পরিষ্কার নয়।
২০০৯ সালে শুরু হওয়া তার টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ পর্যন্ত অনেকটা অপূর্ণই রয়ে গেল। বাংলাদেশের হয়ে তার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার শুরু ২০০৭ সালে। দুই বছর পর টেস্ট ক্যাপ পান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। অভিষেক টেস্টে ব্যাটিংয়ে ভালো না করলেও বল হাতে প্রথম ইনিংসে পান ৩ উইকেট, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫টি। এখনও তা অভিষেকে দেশের বাইরে বাংলাদেশের হয়ে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড। তখন তিনি পুরোপুরি অলরাউন্ডার। ব্যাট করছিলেন ৮ নম্বরে, সঙ্গে বোলিং। ব্যাটিংয়ের সাফল্যের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টে প্রথম ফিফটির দেখা পান ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে। পরের টেস্টে খেলেন ৯৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। ওই সিরিজে তার ব্যাটিং দেখেই ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার তাকে বলেন বিশ্বের সেরা ৮ নম্বর ব্যাটসম্যান।
পরের সিরিজেই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ পান নিউজিল্যান্ড সফরে হ্যামিল্টনে। তাতে ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন মেলে ওই বছরই। পাঁচে উঠেও শুরুটা খারাপ করেননি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টে করেন দুটি ফিফটি। এরপর থেকে আর মেলেনি খুব ধারাবাহিকতা। মাঝেমধ্যে দু-একটি ফিফটি, বারবার থিতু হয়ে আউট হওয়া, এই ছিল নিয়মিত চিত্র। জায়গা নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। বিশেষ করে ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের সময়টায় ২৩ ইনিংসে তার ফিফটি ছিল কেবল ৩টি। তবু একটু ব্যাটিং, একটু বোলিং আর সীমিত ওভারে ভালো পারফরম্যান্স মিলিয়ে দলে টিকে যান।
সব মিলিয়ে ৫০ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরি ও ১৬ ফিফটিতে ২ হাজার ৯১৪ রান করেছেন ৩৩.৪৯ ব্যাটিং গড়ে। শেষ দিনের আগে বোলিংয়ে উইকেট ৪৩টি, অভিষেক টেস্টের সেই বোলিংই একমাত্র ৫ উইকেট। মূল অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে নানা সময়ে ৬টি টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসহিংসতা রোধে কঠোর হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
পরবর্তী নিবন্ধইউপি নির্বাচন নিয়ে সরগরম দক্ষিণ চট্টগ্রামের রাজনীতি