টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে যৌথ দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করবে ঢাকা-দিল্লি : শেখ হাসিনা

| রবিবার , ২৩ জুন, ২০২৪ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাসস জানিয়েছে, দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে শেখ হাসিনা এ কথা বলেছেন।

বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, উভয় দেশ একটি রূপকল্প অনুমোদন করেছে, যাতে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে দুই দেশই পরিচালিত হতে পারে। আমরা টেকসই ভবিষ্যতের জন্য ডিজিটাল এবং সবুজ অংশীদারত্বের বিষয়ে একটি যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে সম্মত হয়েছি। খবর বিডিনিউজের।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্সে বলেছেন, শনিবার হায়দ্রাবাদ হাউসে শেখ হাসিনা পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানান মোদী। এরপর দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী একান্ত বৈঠকে বসেন। পরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে ঢাকা ও নয়াদিল্লি। এসব স্মারকের মধ্যে ৭টিই নতুন। এছাড়া তিনটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়েছে। বৈঠক ও সমঝোতা স্মারক শেষে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরতে সংবাদ সম্মলেন আসেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদী।

শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, নিরাপত্তা ও বাণিজ্য সম্পর্কের বিষয়টি রয়েছে। ভারতকে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিবেশি, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অনেক মূল্য দেয়, যে সম্পর্কের সূচনা হয়েছে একাত্তরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়।

বাংলাদেশভারত সম্পর্ক ক্রমাগত দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন শেখ হাসিনা। আমাদের দুই পক্ষের বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে, যেখানে আমরা পারস্পরিক স্বার্থের অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছি। এসবের মধ্যে রাজনীতি ও নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও সংযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছি, বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের জনগণ ও দেশের উন্নতির জন্য একে অপরের সাথে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছি।

যেহেতু নতুন সরকার গঠনের মাধ্যমে ঢাকা ও দিল্লি নতুনভাবে পথচলা শুরু করেছে, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় আমরা ‘রূপকল্প২০৪১’ এর মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘বিকশিত ভারত২০৪৭’ অনুসরণ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেছেন, দুই দেশ নিজেদের মধ্যে যেসব সমঝোতা স্মারক সই করেছে, সেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি নবায়ন করা হয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উভয় দেশ উচ্চ পর্যায়ের সম্পর্ক বজায় রেখেছে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতের সরকার ও জনগণের অবদানের কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাই ভারতের সেইসব বীরদের প্রতি যারা ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই সফরের আমন্ত্রণের জন্য মোদী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের জন্য ফের আমন্ত্রণ জানান। এদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আয়োজন করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজের।

এর আগে সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে দেওয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরে ভূ-গর্ভস্থ বর্জ্য সংরক্ষণাগার নির্মাণে ছয়টি স্থান চূড়ান্ত
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম থেকে বাস যাবে কলকাতায়